Image description

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় দাখিলকৃত চার্জশিট গ্রহণ করেছে আদালত। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণযোগ্যতার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানিতে বাদী ও আলিফের পিতা জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বাদীপক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোঃ রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান রিপোর্টে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় এজাহারনামীয় ৩ জনকে এবং সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তদন্তে প্রাপ্ত ১ জনকে অব্যাহতির প্রার্থনা করেছেন। উক্ত ব্যক্তির নাম সুকান্ত দত্ত, যিনি সিএমপির অস্ত্র, মাদক, চুরি, ডাকাতিসহ ৮টি মামলার আসামি। তদন্ত রিপোর্ট তাকে "দুর্ধর্ষ আসামি" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে আরও জানান, ঘটনার সাথে সুকান্ত দত্তের সম্পৃক্ততা রয়েছে মর্মে তদন্ত রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার পর মূল হত্যাকারীদের সাথে তার ছবি ভাইরাল হয়েছে। সুতরাং তাকে আসামি হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানানো হয়। আদালত এই আবেদন গ্রহণ করেন।

আদালত সুকান্ত দত্তকেসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন এবং পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দেন।

এর আগে গত ১০ আগস্ট আদালত বাদীর উপস্থিতিতে রিপোর্ট শুনানির জন্য সমন জারি করেন। সেই আদেশ মোতাবেক সোমবার বাদী জামাল উদ্দিন আদালতে হাজির হন এবং তদন্ত প্রাপ্ত আসামির নারাজি দাখিল করবেন না মর্মে আদালতে অবহিত করেন।

উল্লেখ্য, চার্জশিটভুক্ত ৩১ জনকে আসামি করে মামলার এজাহার দায়ের করা হলেও এজহারনামীয় গগন দাশ, বিশাল দাশ ও রাজকাপুর মেথরের তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।  তবে নতুন করে চিন্ময় দাশসহ আরও ১০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করে মোট ৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

বর্তমানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ২০ জন আসামি গ্রেপ্তার আছেন এবং ১৮ জন পলাতক রয়েছেন।

চার্জশিটে বর্ণিত আসামিদের মধ্যে রয়েছে- চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশ, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাস, ওমকার দাশ, বিশাল, লালা দাশ, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাশ, সুমিত দাশ, সনু দাস, সকু দাশ, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস ও দ্বীপ দাশ।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা দায়ের হয়।