
পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের আবাসিক এলাকার সড়কগুলো যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা, উল্টে পড়া ডাস্টবিন, পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দায়িত্বে অবহেলা এবং ময়লা ব্যবস্থাপনার অপর্যাপ্ততার কারণে নাগরিকদের দুর্ভোগ বাড়ছে। ফলে পথচারীদের হাঁটা-চলা দুরূহ হয়ে পড়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় পৌরসভার নাগরিক সেবার এই অবনতি ঘটেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা কলাপাড়া, পায়রা সমুদ্র বন্দর, শের-ই-বাংলা নৌ ঘাঁটি ও কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার কাছাকাছি হওয়ায় এখানে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। কিন্তু যথাযথ নাগরিক সেবা না থাকায় পর্যটকরা শহরটি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পোষণ করছেন। পৌরকর প্রদান করেও নাগরিকরা প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছেন না। পানির লাইনে পানি না থাকা, রাতে সড়ক বাতি না জ্বলা, নিম্নমানের উপকরণে সড়ক নির্মাণের কারণে যান চলাচলে অসুবিধা এবং পুকুর চুরির মতো সড়কের অবস্থা এখানকার চিত্র।
শহরের অধিকাংশ এলাকায় ডাস্টবিনের ময়লা সড়কে ছড়িয়ে পড়ছে, যা নিয়ে গরু-ছাগল ও কুকুরের টানাটানি চলছে। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সময়মতো ময়লা অপসারণ না করায় আবাসিক এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। অনেক নাগরিক গৃহস্থালির ময়লা খাল, জলাশয় ও ড্রেনে ফেলছেন, ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খাল ময়লায় ভরে গেছে, এবং প্রভাবশালীদের অবৈধ দখল উচ্ছেদে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আনিচুর রহমান বলেন, “পরিচ্ছন্ন কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বখশিশ দেওয়ার পরও তারা কাজ করছে না। গত তিন-চার দিন ধরে বাসার সামনের ডাস্টবিন থেকে ময়লা অপসারণ না হওয়ায় আমরা বিপাকে আছি।”
পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. নুরুল হক জানান, “ময়লা পরিবহনের ইঞ্জিন ভ্যানের ব্যাটারি চুরি হওয়ায় কিছু এলাকায় ময়লা অপসারণ সম্ভব হয়নি। তবে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেসব সড়কে গাড়ি প্রবেশ করতে পারে, সেখানে নিয়মিত ময়লা অপসারণ করা হচ্ছে।”
এছাড়া, পৌরসভার উন্নয়ন কাজ ও হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ডের ইজারা সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। রাজস্ব আয়ে গড়মিল ও চলমান অর্থবছরে আয়ের ব্যাপক হ্রাস পৌরসভার আর্থিক ব্যবস্থাপনায় প্রশ্ন তুলেছে।
Comments