
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সাত দফা দাবিতে কর্মবিরতির আল্টিমেটাম দিয়েছেন। বুধবার দুপুরে হাসপাতালের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরের উপস্থিতিতে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিক প্রতিনিধি এবং সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি নাজমুল হুদা জানান, স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের দাবিতে চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে তারাও একমত। তবে, আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট রোগীদের ভোগান্তি তারা সমর্থন করেন না।
তিনি বলেন, "ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বিকেল ও রাতে সিনিয়র চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সেবা দিয়ে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি হাসপাতালে একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে।"
নাজমুল হুদা জানান, গত ৩ আগস্ট শিশু বিভাগে চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের ওপর হয়রানি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর ৬ আগস্ট সার্জারি ইউনিট-৩-এ রোগীর ছাড়পত্র নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ১০ আগস্ট সার্জারি-২ ইউনিটে এক রোগী ভর্তি ছাড়াই জোর করে চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। ১২ আগস্ট পর্যন্ত এমন মোট আটটি ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, "এসব ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ও কাজের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। চিকিৎসকরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।" এই পরিস্থিতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সাত দফা দাবি পেশ করেছেন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবিসমূহ:
-
কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
-
অ্যাডমিশন ও পোস্ট অ্যাডমিশন ওয়ার্ডে আনসার সদস্যদের দ্বারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
-
দর্শনার্থী প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে দর্শনার্থী কার্ড চালু করা; একজন রোগীর সঙ্গে একজন দর্শনার্থী থাকতে পারবেন।
-
জরুরি ও ক্যাজুয়ালটি বিভাগের কার্যকারিতা ও উন্নতি সাধন।
-
হাসপাতালের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা এবং বন্ধ থাকা পরীক্ষাগুলো দ্রুত চালু করা।
-
হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ।
-
বেড সংখ্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি বন্ধ করা এবং প্রয়োজনে বেড সংখ্যা বাড়ানো।
মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর সবাইকে ধৈর্য ধরে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাজ করছে। এজন্য সবাইকে সময় দিতে হবে।"
Comments