Image description

রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনির শিকার হয়ে রুপলাল দাস ও প্রদীপ লালের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের দাবি, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও ‘উত্তেজিত জনতার ভয়ে’ তাদের উদ্ধার না করেই ফিরে গিয়েছিল, অথচ সে সময় রুপলাল ও প্রদীপ উভয়েই জীবিত ছিলেন।

নিহত রুপলাল দাস একজন মুচি এবং প্রদীপ লাল একজন প্রতিবন্ধী ভ্যানচালক ছিলেন।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার রাতে যখন তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট স্কুল মাঠে রুপলাল ও প্রদীপকে মারধর করা হচ্ছিল। তখন খবর পেয়ে পুলিশের দুটি ভ্যান সেখানে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশ উত্তেজিত জনতার ভিড় দেখে তাদের উদ্ধার না করেই চলে যায়। সয়ার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, পুলিশ যখন ফিরে যায় তখনো গণপিটুনির শিকার দুজন জীবিত ছিলেন।

প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল আবার ঘটনাস্থলে ফিরে আসে এবং তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রুপলালকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং প্রদীপ লাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পুলিশের এই ভূমিকার বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক বলেন, "থানা থেকে ঘটনাস্থল বেশ দূরে। যখন জনতার ভিড় তৈরি হয় তখন স্কুল মাঠে তিন-চার হাজার মানুষ ছিল। উত্তেজিত এত মানুষের ভিড় ঠেলে ওই দুজনকে রক্ষা করা পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয়নি।"

নিহত রুপলাল দাসের ছেলে জয় দাস বলেন, "বিনা অপরাধে আমার বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। ভিডিওতে দেখেছি বাবা হাতজোড় করে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন কিন্তু ওরা কোনো কথাই শোনেনি।"

স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, সম্প্রতি এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় মানুষ ক্ষুব্ধ ছিল। এমন অবস্থায় ভ্যানচোর সন্দেহে যখন এই দুজনকে আটক করা হয় তখন উত্তেজিত জনতা তাদের কোনো কথা শুনতে রাজি হয়নি। 

এই ঘটনায় রুপলালের স্ত্রী ভারতী দাস বাদী হয়ে ৭০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।