
থাইল্যান্ডের পর্যটন খাতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তা নাজির সরকার এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। এক যুগ আগে ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করা তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘ইয়াকুব ট্রাভেলস’ আজ থাইল্যান্ডের পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশিদের কাছে একটি পরিচিত নাম। পাতায়ায় বসবাসরত নাজির সরকারের এই যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশি পর্যটকদের সেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর লক্ষ্য প্রসারিত হয়েছে, এবং এখন তিনি শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারত, নেপাল, হংকং ও ইংল্যান্ডের পর্যটকদেরও উন্নত সেবা দিচ্ছেন তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘নাস ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল’ (NAS Tour and Travel) এর মাধ্যমে।
কঠিন শুরু থেকে সাফল্যের শীর্ষে
নাজির সরকার ত্রিশ বছর আগে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান এবং সেখানে সংসার শুরু করেন। প্রথম দিকে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত থাকলেও পর্যটন খাতে তাঁর পথচলা শুরু হয় ২০১২ সালে। তিনি বলেন, “শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না। এই খাতে আমার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে ভ্রমণের প্রতি আমার আগ্রহ এবং ২৫টি দেশ ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা আমাকে এই ব্যবসার জন্য উৎসাহিত করেছিল। আমার ছোট ভাই ইমরুল কাওসার ইমন আমাকে সব সময় সাহস জুগিয়েছেন। তার সঙ্গে একসঙ্গে আমরা এই ব্যবসা শুরু করি।”
পর্যটকদের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত
নাজির সরকারের প্রতিষ্ঠান বর্তমানে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, ফুকেট, ক্রাবি, পাতায়া, খো-সামেদ, কাঞ্চনাবুরিসহ ১০টি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে ৪০টিরও বেশি স্টার মানের হোটেল, ট্যুর গাইড, ট্যুরিস্ট বাস, প্রাইভেট কার এবং ডে-লং ট্যুরের একটি শক্তিশালী চেইন গড়ে তুলেছে। তিনি বলেন, “ব্যবসার মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে পারাটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য। বিদেশের মাটিতে একজন বাংলাদেশি হিসেবে নিজের ভাষাভাষী মানুষকে সেবা দেওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। আমাদের রিটার্ন কাস্টমারের সংখ্যা অনেক বেশি, এবং গত ১২ বছর ধরে বাংলাদেশের অসংখ্য ট্রাভেল এজেন্সি আমাদের সঙ্গে কাজ করছে।”
থাইল্যান্ডে ব্যবসা পরিচালনার চ্যালেঞ্জ
নাজির সরকার জানান, থাইল্যান্ডে ব্যবসা পরিচালনা সহজ নয়। তিনি বলেন, “এখানে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে ব্যবসা করতে হয়। অবৈধ পন্থায় কিছু করলে তার খেসারত দিতে হয়।” তবে তাঁর সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি থাই নাগরিকদের আস্থা অর্জন করেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান এখন বাংলাদেশি পর্যটকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যটকদেরও আকর্ষণ করছে।
বাংলাদেশিদের জন্য গর্ব
নাজির সরকারের সাফল্য বাংলাদেশিদের জন্য একটি গর্বের বিষয়। বিদেশের মাটিতে নিজের পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে তিনি একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছেন। তাঁর এই অর্জন কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য একটি প্রেরণার উৎস।
Comments