
৬০ বসন্ত পার করে জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করলেন নাছির উদ্দিন চৌধুরী, যিনি ‘শিবির নাছির’ নামেই বেশি পরিচিত। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাছিরের বিয়ের বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও অস্ত্র আইনে মোট ৩৬টি মামলায় টানা ২৬ বছর কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান। মুক্তির ১১ মাস পর বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ৬০ বছর বয়সী নাছির উদ্দিন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) কুলসুমা বেগমকে তিনি জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন।
নাছিরের বিরুদ্ধে জোড়া খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও অস্ত্র আইনের মামলা ছিল ৩৬টি। একে একে খালাস পান ৩১টি মামলায়। দুটিতে সাজা হলেও আগে কারাভোগে শেষ হয়ে যায়। আছে আর তিনটি মামলা। এর মধ্যে দুটি মামলায় আগে থেকে জামিনে ছিলেন। শেষ মামলায় গত বছরের ১১ আগস্ট জামিন হওয়ার পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান নাছির। র্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্ত নাছির একসময় শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকায় ‘শিবির নাছির’ নামের পরিচিত হয়ে ওঠেন।
কারা সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ৯ এপ্রিল থেকে কারাগারে ছিলেন নাছির। দীর্ঘ ২৬ বছর পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। বর্তমানে ফটিকছড়ির তিনটি হত্যা মামলা বিচারাধীন।
নাছিরের বড় বোন লিলি আক্তার বলেন, হাটহাজারীর ছিপাতলী গ্রামের কুলসুমা বেগমের সাথে তাঁর ভাই নাছিরের বিয়ে হয়েছে বৃহস্পতিবার। এতে ১৫ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। মেয়েপক্ষ থেকে তাঁরা কোনো যৌতুক নেননি। এখন তাঁর ভাই সংসারী হয়ে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে চান।
বিবাহিত জীবনে যাতে সুখী হতে পারেন, এ জন্য দোয়া চেয়েছেন নাছির। তিনি বলেন, ব্যবসা করে সংসার চালিয়ে সুন্দর জীবন যাপন করতে চান তিনি।
আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর নাছিরের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রাবাসে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় রায় হয়। এতে তাঁর পাঁচ বছরের সাজা হয়েছিল। এর আগে ২০০৮ সালে অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়। ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন হত্যা মামলায় খালাস পান নাছির। ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর জমিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরি ও হাটহাজারীর তিন খুনের মামলায় খালাস পান নাছির। ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রামের জামাল খান রোডে অধ্যক্ষ মুহুরির বাসায় ঢুকে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে। এভাবে ৩১টি মামলায় খালাস পান নাছির।
নাছিরের আইনজীবী মনজুর আহমেদ আনসারী দাবি করেন, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে নাছিরকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাই খালাস পেয়েছেন তিনি।
Comments