Image description

গোপালগঞ্জে রণক্ষেত্র। আওয়ামী সমর্থীত নারীরাও নামছে রাজপথে, যাবে জীবন চলে যাক এনসিপি সব নিপাত যাক। এমন শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠছে গোপালগঞ্জ সদর। পথে পথে বেরিগেড, জায়গায় জায়গায় আগুন,সবার হাতে ঢাল তলোয়ার, ট্যাঁটা, বল্লব সুরকি, লাটি, রড, বাটাম, দ্যাও ছ্যান্দা, বড় ঐশী ও লম্বা লম্বা দাঁড়ালো অস্ত্রসহ চলছে রাস্তায় রাস্তায় চলছে মিছিল।

ফোনে ফোনে চলছে সব জায়গায় যোগাযোগ। পিঁপড়ের সাঁড়ির মত নারীদের নেতৃত্বে ও চলছে মিছিল। বয়স্ক নারীদেরকেও মিছিলে দেখা গেছে। ঘরে নেই বিবাহযোগ্যা মেয়েরাও। তারা যে কোন মুল্যে এনসিপির কোন নেতাকে ডুকতে দিবে না গোপালগঞ্জে।

গোপালগঞ্জ শহর থেকে উপশহর, উপশহর থেকে শহরের পাড়া মহল্লা ও গ্রামের মধ্যে চলছে এনসিপির বিরুদ্ধ শ্লোগান। মিছিলসহকারে সবাই জড়ো হয়ে ছুঁটছে সদরের এনসিপির সভামঞ্চের দিকে। সবার মুখে একটাই শ্লোগান "যাবে জীবন চলে যাক এনসিপির সব নিপাত যাক"।

সকাল থেকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে বহু লোক এসে গোপালগঞ্জের আন্দোলনেরকারীদের যোগ হয়ে বিশাল মিছিল একত্র হচ্ছে। এনসিপির সভাকে বন্ধ এবং কোন নেতাকর্মী যাতে গোপালগঞ্জে ডুকতে না পারে ,সেদিকে লক্ষ করে শত শত নারীপুরুষ প্রধান প্রধান সড়ক তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।

এনসিপির মিটিং ঠেকাতে টুঙ্গিপাড়ায়, গোপালগঞ্জ সদর, মুকসুদপুর, কাশিশয়ানি, টেকেরহাট, সালথা নগরকান্দা, ভাঙ্গা থেকে দলে দলে যাত্রী বেসে বহু মানুষ ছুঁটে গেছে গোপালগঞ্জে।

বিভিন্ন জায়গায় থেকে খন্ড খন্ড মিছিল সহকারে প্রধান সড়কে সকলে ঝড়ো হলে গোটা গোপালগঞ্জ জেলা সদর এখন মিছিলের নগরিতে পরিনত হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিছিদ্র নিরাপওার ব্যাবস্হা থাকলেও কেউ করছে না জীবনের মায়া। পুলিশের সামনেই পুলিশের গাড়িতে আগুন। ইউএনওর গাড়িতে ইটপাটকেল। পরে ভাংচুর।

এনসিপির বিরুদ্বে সকলে ঐক্যবদ্ধ গোপালগঞ্জবাসী ইস্পাতের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে এমনটাই দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে গাছের গুড়ি বিছিয়ে করা হয়েছে সড়ক অবরোধ। সব মিলিয়ে গোপালগঞ্জ এখন বিপদগামী জনপদ।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনরত অবস্থা একাধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে গোপালগঞ্জ থানার ওসি নিশ্চিত করছেন। তবে কতজন আহত হয়েছেন তা এখনও পরিস্কার করেনি। 

বৃস্পতিবার ফরিদপুরেও এনসিসিপির একটি প্রোগ্রাম আছে ফরিদপুর সদর থানার জনতা ব্যাংকের মোড়ে। গোপালগঞ্জের এই ঘটনায় এখানেও নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রাখছেন সাধারণ জনতা।

এই ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। বুধবার সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে সমবেত হয়। এক পর্যায়ে তারা গোপালগঞ্জ টহল পুলিশের একটি টিমকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এই হামলায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (আইসি) আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার এবং মিনহাজ আহত হয়েছেন। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ঘটনার খবর পেয়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, “কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। তবে আমাদের পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছে এবং একটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। আহত ওই তিন সদস্যকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”

তবে এই গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রথম সাড়ির নেতাদের সাথে কথা বললে তারা সকলেই বলেন এই মুহুর্তে আমরা কোন মন্তব্য করতে চাই তবে সময় হলে কথা বলবো।