Image description

গত বছর চট্টগ্রামে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অর্ধশতাধিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করলেও এখন পর্যন্ত সেগুলোর একটিও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। সরকারের পতন পর্যন্ত চলা এসব সহিংসতায় অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছিলেন।

গত বছরের ১৬ জুলাই নগরীর মুরাদপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে তিনজন নিহত হন। এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে যুবলীগকর্মী মো. ফিরোজকে গত ২৪ অক্টোবর র‌্যাব গ্রেপ্তার করলেও, তার ব্যবহৃত অস্ত্রটি এখনোও উদ্ধার হয়নি।

একইভাবে, গত বছরের ১৮ জুলাই বহদ্দারহাটে আন্দোলনে হামলা-গুলিতে চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গত ২২ নভেম্বর পুলিশ তৌহিদুল ইসলাম ফরিদকে গ্রেপ্তার করে। ফরিদ স্বীকারোক্তিতে জানান, তিনি একাই ২৮ রাউন্ড গুলি ছুড়েছিলেন। কিন্তু তার ব্যবহৃত অস্ত্রের হদিসও এখনো মেলেনি।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চট্টগ্রামে গত বছরের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম হামলা-গুলির ঘটনা ঘটে। এরপর ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলা সংঘাতে অন্তত ১৪ জন নিহত হন। ছবিতে শটগান, শাটারগান, বিদেশি পিস্তল, এলজি, একে-৪৭ সদৃশ রাইফেল, রিভলবারসহ অর্ধশতাধিক অস্ত্র ব্যবহার হতে দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মাহমুদা বেগম জানান, "থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রসহ অনেক অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।" তবে, আন্দোলনের সময় ব্যবহৃত এই নির্দিষ্ট অস্ত্রগুলোর বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অন্তত ১৮ জন অস্ত্রধারীকে শনাক্ত করেছে। এদের মধ্যে ফরহাদুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে রিন্টুকে শটগান, সোলাইমান বাদশাকে একে-৪৭ সদৃশ রাইফেল, তৌহিদুল ইসলাম ফরিদকে শাটারগান, দেলোয়ারকে শটগান, এনএইচ মিঠু ও জাফরকে পিস্তল, তাহসীনকে রিভলবার ব্যবহার করতে দেখা যায়।

এছাড়াও, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, আকবর আলী, মিজান সিকদার, কর্মী মো. জালাল, যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম শামীম, টুটুল নন্দী, মো. মিজান, ছাত্রলীগ নেতা হোসাইন অভি, মোহাম্মদ ফয়সাল, হাবিবুর রহমান আহনাফ ও মহিউদ্দিন ফরহাদকেও অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এই অস্ত্রগুলো এখনো অধরা রয়ে গেছে, যা জনমনে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।