Image description

ফরিদপুরের মধুখালীতে ফরিদপুর সেনা ক্যাম্প এবং পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালিত এক অভিযানে দেশের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সম্প্রতি ফরিদপুর সেনা ক্যাম্পে একাধিক অভিযোগ আসে যেখানে ভুক্তভোগীরা বিকাশ, নগদ ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ভুয়া কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি সেজে প্রতারিত হওয়ার কথা জানান। 

প্রাথমিক তদন্তে  প্রতারক চক্র গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট, পিন ও ওটিপি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। অভিযোগ গুলো বিশদভাবে পর্যালোচনা করে ও কমন মোবাইল নম্বর গুলো গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ট্রেস করে প্রতারিত অর্থের উৎস দেশের বিভিন্ন জেলার হলেও এর চূড়ান্ত গন্তব্য ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বিকাশ প্রতারক চক্রের সদর দপ্তর খ্যাত ডুমাইন ইউনিয়নের ডুমাইন গ্রামে কেন্দ্রীভূত।

ফরিদপুরের সেনা ক্যাম্পের ১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে ৩ দিনব্যাপী এই চক্রের প্রযুক্তিগত ব্যবহার, ভৌগোলিক অবস্থান এবং আর্থিক লেনদেন পদ্ধতি নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে। তথ্য বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে  প্রতারিত সংগৃহিত অর্থের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশে সক্রিয় শতাধিক অনলাইন জুয়া ও বেটিং সাইটে প্রবেশ করানো হতো। এই চক্র বিশেষ সফটওয়্যার ও স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে অনৈতিকভাবে 'শতভাগ জয়' নিশ্চিত করে জুয়ার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করত। এরপর ওই প্লাটফর্ম থেকে সংগৃহীত অর্থের একটি বড় অংশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের দ্বারা তৈরি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাচার করা হতো। অবশিষ্ট অর্থ চক্রের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে ভাগ বাটোয়ারা করে নিত।

১৪ জুলাই সোমবার ভোররাতে যৌথবাহিনী একটি সুপরিকল্পিত অভিযান শুরু করে। প্রায় সাত ঘণ্টাব্যাপী পরিচালিত এই অভিযান সকাল সাড়ে ৮টায় ডুমাইন বাজার এলাকায় সফলভাবে সমাপ্ত হয়। যৌথ বাহিনী পূর্বনির্ধারিত সন্দেহ ভাজনদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতারণা চক্রের মূলহোতা ও উক্ত এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মো. কামরুল মিয়া (৪০) তার চার সহযোগী অমরেশ বিশ্বাস (৩০), সোহান মালিক (২৪), হাফিজুর রহমান (৪২) এবং শেখ শাকিল আহমেদ (২৬) কে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আটক করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ এমএম নুরুজ্জামান জানান আটককৃতরা মধুখালীর ডুমাইনসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি মামলা হয়েছে। আসামীদের কোর্টে  প্রেরন করা হয়েছে।