যুবদল নেতার ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবির প্রতিবাদে এবং শরীয়তপুরের গাড়ি রাজধানীতে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে  শনিবার পদ্মা সেতুর দক্ষিণ টোল প্লাজা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যুব শক্তি ও শরীয়তপুরের সর্বস্তরের জনগণ। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে, পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পদ্মা সেতু জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে এই বিক্ষোভে প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাত্র-জনতা অংশ নেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির অভিযোগ করেন, "ফাহিম নামের এক যুবদল নেতা যাত্রাবাড়ীতে শরীয়তপুরের পরিবহন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে। সম্প্রতি সে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা দিতে না পারায় যুবদল নেতা ও তার লোকজন শরীয়তপুরের কোনো গাড়ি যাত্রাবাড়ী ঢুকতে দিচ্ছে না। গাড়ি ঢুকলেই ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধর করছে।"

ইমরান আল নাজির আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাঁদাবাজ ফাহিমকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। 

একইসঙ্গে তিনি পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে পাথর মেরে ব্যবসায়ী লালচাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান, অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

মুখ্য সংগঠক আমিন মোহাম্মদ জিতু বলেন, "সারা দেশে যে মব জাস্টিস শুরু হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাথর মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। চব্বিশ-পরবর্তী বাংলাদেশে এমন মব জাস্টিস ও চাঁদাবাজি চলতে পারে না।" তিনি জানান, চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসাইন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়েছে এবং তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেছেন।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর যাত্রাবাড়ীতে শরীয়তপুরের বিভিন্ন পরিবহন থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে আসছেন স্থানীয় যুবদল নেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিম। ৯ জুলাই থেকে চাঁদা না দেওয়ায় তিনি ও তার লোকজন শরীয়তপুরের প্রায় ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর এবং ১০ জন শ্রমিককে আহত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।