Image description

পটুয়াখালীর দুমকিতে ২নম্বর ইট ব্যবহারে চলছে গ্রামীণ সড়কের টেকসই উন্নয়ন টেন্ডারের কাজ। ভেকু মেশিনে রাস্তা কেটে নামমাত্র বালু ফেলে রোলার বিহীন মাদায় পচা ইট দিয়ে হেরিংবন্ডের কাজ চালাচ্ছেন ঠিকাদারের লোকজন। স্থানীয়দের কথা দূরের থাক, খোদ ইউএনও'র নির্দেশনাও মানছে না দলকানা ঠিকাদার। সাব কন্ট্রাক্টে কাজ নিয়ে তারা বেপরোয়া গতিতে টেকসই রাস্তা নির্মাণের নামে দুই নম্বর ইট দিয়ে পরিমাণে কম বালু ব্যাবহারে নিম্নমানের কাজ করছেন।  

খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিদর্শনে এসে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্ত একদিন পরই ফের একই ইট দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এডিবির টেন্ডারে ৮০ লাখ টাকার ৫শ' মিটার করে মোট ১ কি.মি এইচবিবির কার্যাদেশ পায় পটুয়াখালীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স গাজী এন্টারপ্রাইজের মালিক নুরুজ্জামান। প্রকল্প দু'টি হচ্ছে শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের তারাগাজীর বাড়ি থেকে খান বাড়ি মসজিদ হয়ে দক্ষিন দিকে কচ্ছপিয়া খাল ও ২ নং ওয়ার্ডের এনায়েত খানের মসজিদ থেকা বাদুয়া পাকা সড়ক পর্যন্ত ১ কি. মি. কাঁচা রাস্তার টিকসই এইচ বিবি উন্নয়ন কাজ। 

কাজের শুরুতেই এলাকাবাসীর বাঁধা সত্ত্বেও টেন্ডারের শর্তভঙ্গ করে ঠিকাদারের লোকজন রাস্তা কেটে বেড বানিয়ে নামমাত্র বালু দিয়ে নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছিল। এতে একদিকে রাস্তাটির স্বাভাবিক উচ্চতা হ্রাস পায়, অন্যদিকে ২/৩ নম্বর ইট ব্যবহার করায় স্থায়িত্ব নিয়ে জনমনে শঙ্কার সৃষ্টি করে। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারের লোকজন সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই যেনতেন ভাবে কাজ সম্পন্নের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মোঃ ইজাজুল হক সরেজমিনে পরিদর্শন করে জনস্বার্থ বিবেচনায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে শোকজ করা হয়েছে। গত ২০ মে পাঠানো শোকজ চিঠিতে ঠিকাদারকে নিম্নমানের ইট সরিয়ে তদস্থলে কোটেশন অনুযায়ী একনম্বর ইট ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে খারাপ ইটের রাস্তা ভেঙ্গে নুতন করে কাজ না করলে বিল কেটে রাখার কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু সাব ঠিকাদার যুবদল কর্মী আমির ও জুয়েল শোকজের তোয়াক্কা করছেন না। 

স্থানীয়দের অভিযোগ এলাকার কয়েকজন যুবদল কর্মীর প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় নিম্নমানের ইট, বালু ব্যবহারে যেনতেন ভাবে কাজটি দ্রুততার সাথে করছেন।

এ বিষয়ে গাজী এন্টারপ্রাইজের মালিক ঠিকাদার নুরুজ্জামান বলেন, কাজটি তিনি নিজে করেন না। তার কাছ থেকে সাব কন্ট্রাক্ট নিয়ে আমির হোসেন ও জুয়েল নামের দুই যুবদল কর্মী কাজটি করছেন। 

তিনি আরও বলেন, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে ফেলে ইউএনওর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার জন্য সাব ঠিকাদার আমির ও জুয়েলকে বলে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মোঃ ইজাজুল হক বলেন, কোন ভাবেই দুই নম্বর ইট ব্যবহার মানা হবে না। ওগুলো ভেঙে নতুন করে করতে হবে। অন্যথায় বিল আটকে দেয়া হবে।