রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছেন। তিনি পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ৫৮৩ অনামিকা কনকর্ড অ্যাপার্টমেন্টে চার সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। মৃতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ- পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সিফাত আলী (৩০) কেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যান।

বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মিরপুর মডেল থানার পুলিশ। এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ঘটনাস্থলে এসে তার স্বামীকে পাওয়া যায়নি। শুনেছি তিনি পলিয়ে গেছেন।

নিহতের ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, রাত ২টার দিকে সিফাত তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে কেয়ার অসুস্থতার কথা জানিয়ে দ্রুত বাসায় আসতে বলেন। কী হয়েছে জানতে চাইলে, তিনি (সিফাত) জানায় কেয়া মারা গেছেন। পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করলে সিফাত পালিয়ে যান। পরে তারা বাসায় ফিরে দেখেন, সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।

নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, সিফাত খুবই বদমেজাজি ছিল। সন্তানদের সামনে খারাপ আচরণ ও মারধর করত। সে নিজে কিছু করে না। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের বলি হয়েছে কেয়া। কেয়ার চার সন্তান রয়েছে- এক মেয়ে ও তিন ছেলে। বড় মেয়ে ভিকারুননিসা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন আগে কেয়া বলেছিল, সে আর পারছে না, সংসার করতে পারবে না। আমরা তাকে বুঝিয়ে আটকিয়েছি। ভুল করেছি। আজ তার খেসারত দিতে হলো।

রফিকুল ইসলাম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ছোট ছোট নাতি-নাতনীদের কি হবে? আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। গলায় দাগও দেখেছি। সুস্থ মানুষ হঠাৎ মারা যাবে এমনটা সম্ভব নয়। সিফাত কেন পালাবে?

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সিফাতের বাবা দীর্ঘদিন ধরে হংকংয়ে থাকেন এবং তার মা অনেক আগেই মারা গেছেন।

এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাত রোমান জানান,  আত্মহত্যা নাকি হত্যা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও পুলিশি তদন্তের পর মৃত্যুর রহস্য স্পষ্ট হবে। সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।