Image description

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন (২৩) ও তার মাকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় কুমিল্লা শহরের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিরও তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষার্থীরা। (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় নগরীর কান্দিরপাড়স্থ পূবালী চত্তরে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কুবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। 

বিক্ষোভ সমাবেশে মা ও মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে  'বিচার, বিচার, বিচার চাই' 'প্রশাসন বিচার চাই' 'আমার বোন কবরে, খুনি কেনো বাহিরে' সুমাইয়ার রক্ত, বৃথা যেতে দেবোনা' এসব স্লোগান দিতে দেখা যায়।

তার সহপাঠী ও লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুনিয়া আফরোজ বলেন, “আমাদের সহপাঠী ও তার মায়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এ ধরনের নৃশংস ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যেন আর কোনো পরিবার এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”

আরেক সহপাঠী হুমাইরা তাসনীম প্রমি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড কেবল একটি পরিবার নয়, পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্যই বেদনাদায়ক। আমরা বারবার এ ধরনের ঘটনার শিকার হতে চাই না। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি, সঠিক তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীরা যেই হোক না কেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাহস না পায়।”

কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বীগ্ন এবং মর্মাহত। আমরা চাচ্ছি এটার দ্রুত তদন্ত হউক এবং দোষীদের খুজে বের করা হউক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার থেকে সবসময় পর্যবেক্ষণ করবো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা উদ্বীগ্ন।"

শিক্ষার্থীরা জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কারণে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

গতকাল রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টার মধ্যবর্তী সময়ে কুমিল্লা নগরীর ৩ নং ওয়ার্ডের কালিয়াজুরি পিটিআই এলাকায় হাতেখড়ি আনন্দ পাঠশালা স্কুল সংলগ্ন ভাড়া বাসায় তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। 

নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম সুমাইয়া আফরিন পিংকি (২৩)। তিনি লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর মায়ের নাম ফাতেমা আক্তার (৫২)। পাঁচ সদস্যের পরিবারের মধ্যে কিছুদিন আগে তাঁর বাবা মারা যান। এছাড়া বর্তমানে বাবা-মা ও বোনকে হারিয়ে দুই ভাই রয়েছেন পরিবারে।