
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) গণঅভ্যুত্থান দিবসে "ঐক্য ও বিজয় ফিস্টে" নিম্নমানের খাবার সরবরাহ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, সরবরাহকৃত মোরগ পোলাওয়ে ছিল আঁধো রান্না করা মাংস, অনেক ক্ষেত্রে কাঁচা ও রক্তযুক্ত অংশ এবং কিছু খাবারে পোকা-মাকড়েরও দেখা মিলেছে।
সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় খাবার বিতরণের পর পরই এসব অভিযোগ আসতে থাকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।
জানা গেছে, বিজয় ফিস্টের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জনপ্রতি ১০০ টাকা এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া ৫০ টাকা মিলিয়ে মোট ১৫০ টাকার বাজেট নির্ধারণ করে আয়োজনটি সম্পন্ন করে। বরিশালের দুটি রেস্টুরেন্ট থেকে এ খাবারের অর্ডার করা হয় বলে জানা যায়। রেস্টুরেন্ট দুটি হলো নাজেমস ও হুমাহুম। এর মধ্যে হুমাহুম রেস্টুরেন্ট থেকে আসা খাবারগুলো সবচেয়ে নিম্নমানের ছিল বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম ‘লিংকার্স ইন বরিশাল ইউনিভার্সিটি’ নামের শিক্ষার্থীদের একটি মতামত গ্রুপে কাঁচা মাংসের একটি ছবি পোস্ট করে লিখেন, “৫০ টাকা এন্ট্রি ফি নিয়ে এই থার্ড ক্লাস বিরিয়ানি দেয়ার দরকার ছিল না। ভার্সিটির ফেস্টে এই রকম খাবার মানায় না। কেউ তো খাবারের জন্য আন্দোলন করে নাই। তাইলে এই খাবার দেয়ার দরকার কী ছিল? আজকে বন্ধের দিনে অনেকেই এই খাবারের উপলক্ষে দূর থেকে ক্যাম্পাসে গেছে।”
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিল হোসেন সানমুন লেখেন, “প্রত্যেক শিক্ষার্থী থেকে ৫০ টাকা করে নিয়ে অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দেয়া হয়েছে। খাবারের পোলাও কিংবা মুরগি কোনোটিতেই স্বাদ ছিলো না। এর মধ্যে আবার মুরগি ঠিকমতো রান্না করা হয় নাই। কাঁচা, রক্ত মেশানো খাবার দেয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঐক্য ও বিজয় ফিস্ট বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের বিজয় ভোজের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। খাবারের জন্য আমরা বরিশালের সবচেয়ে ভালো দুইটি রেস্টুরেন্টকে বাছাই করেছি। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। একটা রেস্টুরেন্টের পক্ষে এত গুলো খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করা সম্ভব না তাই আমরা ২ টা রেস্টুরেন্টে অর্ডার দিয়েছি। আমরা খাবারের অর্ডার দেওয়ার আগে খাবার যাচাই করে দেখছি, কিন্তু এখানে হয়তো বা এতগুলো খাবার সরবরাহ করার ক্ষেত্রে কিছু কিছু খাবারের প্যাকেটে সমস্যা হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু হয়তোবা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে খাবারের মানের ক্ষেত্রে একটু অসুবিধা হয়েছে। যেহেতু এতগুলো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে সেক্ষেত্রে তার মধ্যে কিছু সমস্যা হতে পারে।"
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, “আমি খাবারের সময় বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়েছি, তারা খাবারের মান ভালো বলে জানিয়েছে। তবুও এধরনের অভিযোগের বিষয়ে আমি দেখব।”
Comments