
বাদী-বিবাদী সমঝোতা, ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে দেশের হত্যা মামলার অর্ধেকেরও বেশি আসামি খালাস পেয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি পিবিআই-এর এক গবেষণায় জানানো হয়েছে, ২০১৫-২০১৬ সালে রায় হওয়া ২৩৮টি হত্যা মামলার মধ্যে ১২৩টিতেই আসামিরা খালাস পেয়েছেন।
গবেষণায় উঠে আসা প্রধান কারণসমূহ
বাদী-বিবাদী সমঝোতা: খালাস পাওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ৬৪ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে বাদী ও বিবাদীর মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। যদিও হত্যা মামলায় সমঝোতার কোনো আইনি সুযোগ নেই, তবুও আদালতে বাদী ও সাক্ষীরা মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে আসামিরা খালাস পেয়ে যান।
ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত ও অন্যান্য কারণ: পিবিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪৭টি মামলায় সমঝোতার কারণে এবং ৩২টি মামলায় সমঝোতা ও তদন্তে ত্রুটির কারণে আসামিরা ছাড়া পান। এ ছাড়া ময়নাতদন্তে ভুল, ম্যাজিস্ট্রেটের ত্রুটি এবং মামলার দীর্ঘসূত্রিতাও আসামি খালাস পাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বিচার প্রক্রিয়ার সময়কাল: ২৩৮টি মামলার বিচারের জন্য গড়ে ১০ বছর ১১ মাস সময় লেগেছে। সর্বনিম্ন ২ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত লেগেছে একটি মামলার রায় হতে। অন্যদিকে, তদন্তে পুলিশ গড়ে ১ বছর ৪ মাস সময় নিয়েছে।
পিবিআই-এর উপ-পুলিশ কমিশনার আবু ইউসুফ জানান, মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে সাক্ষীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন বা প্রভাবিত হয়ে যান, যার ফলে আসামিরা খালাস পেয়ে যান। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাও এই দীর্ঘসূত্রিতা এবং সাক্ষী-বাদীর সমঝোতার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ জন হত্যার শিকার হয় এবং বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটে সম্পত্তি ও পারিবারিক বিরোধের কারণে। এছাড়া মাদক, জুয়া, আর্থিক লেনদেন এবং রাজনৈতিক বিরোধও হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কারণ।
Comments