
দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, বিনিয়োগ কমছে, মব বাড়ছে, এবং মেধাবীরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীলরা দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে হঠাৎ পাওয়া ক্ষমতা উপভোগ করছে, যা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টক শোতে এসব কথা বলেন তিনি।
রুমিন ফারহানা বলেন, “যত দিন যাচ্ছে, পরিস্থিতি ততই ঘোলাটে হচ্ছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলার অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যাচ্ছে। শুধু বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের কথা নয়, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যও একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, দ্রুত কাজ করুন, কারণ জনগণ অধৈর্য হয়ে পড়ছে। দর্শক অধৈর্য হলে পরিণতি ভালো হবে না।” তিনি আরও বলেন, “বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে এবং আশঙ্কাজনক হারে কমছে। বিনিয়োগকারীরা একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ ও সরকার দেখতে চায়।”
নেপালের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “নেপালে মাত্র তিনজনের মন্ত্রিসভা শপথ নিয়েছে এবং তারা ঘোষণা দিয়েছে তাদের প্রধান কাজ নির্বাচন আয়োজন। তারা কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বা অজুহাতে সময় নষ্ট করেনি। তারা বলেছে, আমরা শুধু নির্বাচন দিয়ে চলে যাব। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা টালবাহানা দেখছি, যা মোটেও ভালো নয়।”
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীলদের সমালোচনা করে রুমিন ফারহানা বলেন, “যারা দায়িত্বে আছেন, তারা বাংলাদেশের প্রতি দায়বদ্ধ নন। ড. আলী রিয়াজ বলছেন, শুধু নির্বাচনই দেশে পরিবর্তন আনতে পারে না। তাহলে এক বছর নির্বাচন ছাড়া পার করলাম, কী পরিবর্তন এলো? সংবিধান সংস্কার, নারী কমিশন, চিকিৎসা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, প্রশাসন সংস্কারের প্রস্তাব এসেছে, কিন্তু কয়টি বাস্তবায়ন হয়েছে? তারা মানুষের সামনে বাবল তৈরি করছে যে তারা অনেক কিছু করছে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই করছে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, “তারা এমন ক্ষমতা উপভোগ করছে, যা পাওয়ার কোনো যোগ্যতা বা কারণ তাদের ছিল না। তারা বহু বছর আগে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিল। বিদেশে বসে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করতেন, আর এখন বড় বড় পদে বসে বড় বড় কথা বলছেন। কিন্তু আমরা এখানেই থাকব, আমাদের মৃত্যুও এখানেই হবে, ইনশাআল্লাহ।”
দেশের অবস্থাকে “শেষ” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত ৩৬৫ দিনে ৩৭০ বা ৩৮০টি মব হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ বিনিয়োগ করতে চাইবে না, এমনকি বাস করতেও চাইবে না। গত ৪০ বছরে ভয়াবহ ব্রেইন ড্রেন হয়েছে। শিক্ষিত সমাজের অধিকাংশ সন্তান দেশ ছেড়ে চলে গেছে। যারা আছে, তারাও দেশ ছাড়তে চাইছে।”
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, “এই সরকারের দায়িত্বশীলরা এমন ক্ষমতা পেয়েছে, যারা আগে কেউ তাদের চিনতো না, নামও জানতো না। তারা দেশ ত্যাগ করা মানুষ। এখন তারা বড় পদে বসে বড় কথা বলছে, কিন্তু বাস্তবে কোনো কার্যকর পরিবর্তন আনছে না।”
Comments