প্রেমিক ও পরিবারের প্রতারণার শিকার: লাখাইয়ে অনশনে থাকা তরুণীর অসহায় জীবন

লাখাইয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনরত গাজীপুরের তরুণী সুইটি আক্তার সায়মা (১৯) এখন চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। প্রেমিক ইব্রাহিম মিয়া (২৪) পালিয়ে যাওয়ার পর তার পরিবারও প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অনশনের ছয় দিন পরেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় সায়মা বর্তমানে জীরুন্ডা মানপুর গ্রামে তার এক বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
প্রেমিকা সুইটি আক্তার সায়মা জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তিনি যখন মোড়াকরি গ্রামের প্রেমিক ইব্রাহিমের বাড়িতে অনশনে ছিলেন, তখন ইব্রাহিমের বড় ভাই ও আত্মীয়-স্বজনরা তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছিল। তারা বলেছিল, এক-দু'দিনের মধ্যেই তারা বিয়ের ব্যবস্থা করবে। এই কথা বলে তারা তাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে বান্ধবীর বাড়িতে রেখে আসে। কিন্তু তারপর থেকে কেউ তার কোনো খোঁজ নেয়নি।
অসহায় সায়মা বলেন, "আমি এক কাপড়ে এখানে আছি। আমি কীভাবে বাড়িতে যাব? আমার পরিবার আমাকে গ্রহণ করবে না। ইব্রাহিম ও তার পরিবার আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এখন মৃত্যু ছাড়া আমার আর কোনো পথ নেই।" তিনি আরও বলেন, "আমাকে মেনে নিয়ে বিয়ে করিয়ে দেবে বলে এক সপ্তাহ হলেও কেউ আমার খবর নেয়নি।"
সুইটি জানান, ১০ মাস ধরে ফেসবুকের মাধ্যমে ইব্রাহিমের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। ইব্রাহিম তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে সে হঠাৎ পালিয়ে যায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। পরে নিরুপায় হয়ে তিনি ইব্রাহিমের বাড়িতে চলে আসেন।
এ বিষয়ে ইব্রাহিমের পরিবার দাবি করেছে, তারা ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। অপরদিকে, লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বন্দে আলী জানান, তারা এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানেন না, তাই কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না।
প্রেমিকের প্রতারণা এবং পরিবারের আশ্বাসেও কোনো কাজ না হওয়ায় সুইটির জীবন এখন অনিশ্চয়তায় ভরা। এই ঘটনা যেন শিল্পী মান্না দে-র গানের কথার মতোই— "এমনও তো প্রেম হয়, ও চোখের জলে কথা কয়।"
Comments