Image description

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তার পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রাস্তা ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে এবং নদীপাড়ের মানুষজন চরম উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়তে থাকায় ব্যারাজের সব ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, বিকেল ৩টার দিকে পানি ছিল বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচে। সন্ধ্যা ৬টায় পানি বিপৎসীমায় পৌঁছায়। এরপর রাত ৯টায় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে।

জানা গেছে, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার) পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপরে। এতে তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নঞ্চলের বিভিন্ন ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। 

অপরদিকে, তিস্তার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী এলাকায় পানির তোপে একটি রাস্তা ভেঙে গিয়ে জনবসতি এলাকায় প্রবেশ করছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বড় ধরনের বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন। এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চরের নিম্নাঞ্চলের এলাকাগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যায় পানি ছিল বিপৎসীমায়, রাত ৯টার দিকে তা ৫ সেন্টিমিটার উপরে ওঠে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি কিছুটা বেড়েছে ঠিকই, তবে এখনো বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।

তবে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বাপাউবো) এক বিশেষ বার্তায় জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিপৎসীমা অতিক্রম করে থাকতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের তিস্তা পাড়ের নিচু এলাকাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে জানানো হয়।