একটি জাতীয় টেলিভিশনে পুলিশের অপেশাদারিত্ব নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ সংবাদমাধ্যমকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থার হুমকি দিয়েছেন। এই ঘটনায় সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। একই দিনে মাঠে দায়িত্ব পালনকালে দুই সাংবাদিককে হয়রানি এবং একজনকে আটক করার অভিযোগ উঠেছে ডবলমুরিং থানার ওসির বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত গত ১৯ আগস্ট চ্যানেল ২৪-এর সিনিয়র রিপোর্টার এমদাদুল হক চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশার টোকেন বাণিজ্য নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করেন। প্রতিবেদনে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা অবৈধভাবে রিকশা আটক করে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছেন, যা সরকারি কোষাগারে জমা না হয়ে কর্মকর্তাদের পকেটে যাচ্ছে।

এই প্রতিবেদনের পর ২০ আগস্ট সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এতে তিনি প্রতিবেদনটিকে "মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" আখ্যা দেন এবং বলেন, পুলিশের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে হলে সাংবাদিকদের অনুমতি নিতে হবে। ভবিষ্যতে এমন সংবাদ প্রকাশ করা হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

পুলিশ কমিশনারের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ। তিনি বলেন, "একজন পেশাদার পুলিশ কর্মকর্তা এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করতে পারেন না। আমরা ৫ আগস্টের পর এ ধরনের আচরণ আশা করি না। কমিশনার নিশ্চয়ই তার বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন।"

এদিকে, পুলিশ কমিশনারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিনই ডবলমুরিং থানার সামনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকার মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল কাইয়ুম এবং যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক মো. মাসুম হয়রানির শিকার হন। অভিযোগ উঠেছে, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও ডবলমুরিং থানার ওসি বাবুল আজাদ তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি সাংবাদিক মো. মাসুমকে ২০ মিনিট থানায় আটকও করে রাখা হয়।

মো. মাসুম বলেন, "পোশাক শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলে আমি লাইভ করছিলাম। তখন ওসি আমাকে গালাগালি করেন এবং পরে তিনি আমাকে থানায় আটকে রাখেন।"

এ বিষয়ে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের মুখপাত্র মাহমুদা বেগম বলেন, "ডবলমুরিংয়ের ঘটনাটি ডিসি উপস্থিত থেকে সমাধান করেছেন।" 

তিনি আরও জানান, ডিসি ও ওসি এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন। তবে কমিশনারের হুমকির বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।