
ইতিহাস সৃষ্টি করে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল! চলমান এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে স্বাগতিক মিয়ানমারের বিপক্ষে ঋতুপর্ণা চাকমার জোড়া গোলের সুবাদে এই ঐতিহাসিক অর্জন সম্ভব হয়েছে। তার অসাধারণ পারফরম্যান্স এবং দলের সামগ্রিক প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের নারী ফুটবল নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই জয় বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল।
বাফুফে শুক্রবার ঋতুপর্ণার প্রতিক্রিয়া নিয়ে তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। অসাধারণ দ্বিতীয় গোলের পর ঋতু হাত দিয়ে চোখ ঢেকে গোল উদযাপন করেছিলেন। সেই উদযাপনের ছবি ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে জায়গা করেছে। সেই উদযাপন নিয়ে ঋতু বলেন, ‘বিশেষ কোনো কারণ নেই। সেই অনুভূতি প্রকাশ করতে পারব না। আবেগআপ্লুত হয়ে গেছি।’
ঋতুর জোড়া গোলে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে। স্বাভাবিকভাবেই অনেকের বার্তা ও শুভেচ্ছা পেয়েছেন। ঋতু খেলার পর প্রথম ফোন করেছিলেন তার মাকে। মায়ের উচ্ছ্বাস নিয়ে ঋতু বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই মাকে প্রথম ফোন করেছি। আমার মা অসুস্থ। আমি দুই গোল করেছি বাংলাদেশ জিতেছে, এশিয়া কাপে খেলবে এতে মা যেন সুস্থ বোধ করছিলেন ও অনেক খুশি হয়েছিলেন।’
বাংলাদেশ মিয়ানমারকে হারানোর পর এশিয়া কাপে এক পা দেয় বাংলাদেশ। ঘণ্টা তিনেক পর যখন বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান ম্যাচ ড্র হয় তখন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া এশিয়া কাপে খেলা নিশ্চিত হয়। সেই অনুভূতি নিয়ে ঋতু বলেন, ‘অনুভূতি আসলে বলে প্রকাশ করতে পারব না৷ এটা আসলে কল্পনার বাইরে ছিল। এত বছর কষ্টের পর আমরা এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করেছি স্বভাবতই বড় অর্জন। এখনো এক ম্যাচ বাকি এরপর উদযাপন হবে এখনো সেভাবে কোনো উদযাপন হয়নি।’
বাংলাদেশ ফুটবল দলে বেশ কয়েক বছর ধরেই খেলছেন ঋতু। ২০২২ ও ২৪ সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন। জাতীয় ফুটবলার হিসেবে তার লক্ষ্য ছিল এশিয়া কাপে খেলা৷ সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে তার, ‘দুইবার সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ইচ্ছে ছিল এশিয়ায় খেলা। লক্ষ্য ছিল এশিয়ান কাপ নিশ্চিত করা সেটা পূরণ হয়েছে।’
বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশনে অবদান রয়েছে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারেরও। মাস পাঁচেক আগে সিনিয়র ফুটবলারদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। সেটা ভুলে এখন অনেকেই বাংলাদেশ দলে খেলছেন। মিয়ানমার বধের পর ঋতুপর্ণাকে এশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে লীগে খেলার যোগ্য বলে মন্তব্য করেছিলেন বাটলার। কোচের এই প্রশংসা নিয়ে যথেষ্ট বিনয়ী মন্তব্য ঋতুর, ‘আমরা একজন ভালো কোচ পেয়েছি। উনি সব সময় ভালো চান। তিনি আমার প্রশংসা করেছেন জানি না আমি কতটুকু প্রাপ্য।’
সমর্থকরা ফুটবলের প্রাণ। সেই সমর্থকদের প্রতি ঋতুর বার্তা, ‘আপনারা যেভাবে আমাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন এভাবেই সাপোর্ট দিয়ে যাবেন। আপনাদের সমর্থনে আমরা বাংলাদেশের ফুটবল ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে পারব।’
Comments