
মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের উত্তর পাঁচখোলা গ্রামের একমাত্র সড়ক এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি আব্বাস মাতুব্বরের বাড়ির সেতু থেকে ইতালি ব্রিকস্ পর্যন্ত বিস্তৃত। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ। এতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত চরম দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
সরে জমিন ঘুরে জানা যায়, এই গ্রামের প্রায় ৫০০-৬০০ পরিবারসহ আশপাশের কয়েক হাজার মানুষ সড়কটি ব্যবহার করেন। চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়ছেন পথচারী, যাত্রী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া এখন সবচেয়ে বড় সমস্যায় দাঁড়িয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন , সড়ক সংস্কারের দাবিতে একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ধর্না দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও অর্থাভাবে কাজ শুরু করা যায়নি। কয়েক দফা সমাবেশ ও মানববন্ধন করেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল রিজভী বলেন,“আমাদের এখানকার সড়কটি পুরোপুরি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এক থেকে দেড় ফুট গভীর গর্তে ভরা রাস্তায় হাঁটাচলা করাই দায় হয়ে গেছে। আমরা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।”
উত্তর পাঁচখোলা জামে মসজিদের ইমাম আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, “এমন ভয়ংকর সড়ক দেশের আর কোথাও আছে কিনা জানি না। যানবাহন তো চলছেই না, রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়াও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা।”
স্থানীয় যুবক সাগর ফকির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “জনপ্রতিনিধি আসে, আবার যায়। কিন্তু আমাদের সড়কের কোনো উন্নয়ন হয় না। আমরা জেলার মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত এলাকা। কবে যে এই রাস্তাটি সংস্কার হবে, কেউ জানি না।”
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়কটির ছবি দেখেছি। অবস্থা খুবই নাজুক। উপজেলা পরিষদ কিংবা উপজেলা এলজিইডি’র মাধ্যমে সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এতে সময় লাগতে পারে।”
এলজিইডি মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কীর্তনিয়া জানান, “বর্তমানে এই সড়কের জন্য কোনো বরাদ্দ বা প্রকল্প নেই। সরেজমিন পরিদর্শন করে বরাদ্দ পাওয়া গেলে সংস্কারের কাজ শুরু করা যেতে পারে। তবে সেটিও সময়সাপেক্ষ।”
গ্রামবাসীর একটাই চাওয়া, দ্রুত এই সড়ক সংস্কার করা হোক। নইলে প্রতিদিনের এই দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাবে।
Comments