প্রয়াত সাংবাদিক তুহিনের এতিম সন্তানদের দায়িত্ব নিলেন এসপি আখতার

গাজীপুরে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের দুই শিশু সন্তান তৌকির ও ফাহিমের দায়িত্ব গ্রহণ করে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম প্রশংসায় ভাসছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই মানবিক দায়িত্ব পালন করে তিনি এক উজ্জ্বল নজির স্থাপন করেছেন।
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়ায় তুহিনের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের খোঁজখবর নেন এসপি আখতার। শুধু সমবেদনা জানিয়েই ক্ষান্ত হননি, বরং তুহিনের দুই শিশু সন্তানের অভিভাবক হিসেবে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম জানান, এসপি আখতার মানবিকতার জায়গা থেকে তুহিনের পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে শিশুদের সব দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেছেন।
তুহিনের স্ত্রী মুক্তা বেগম আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “ফাহিম এখনো জিজ্ঞেস করে, ‘মা, বাবা কি অফিসে গেছে?’ আমার বুক কাঁপে। আমি চাই, ওরা যেন কখনো বাবার অভাব বুঝতে না পারে। স্যার সেই ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।”
সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সাধারণ মানুষ সামাজিক মাধ্যমে এসপি আখতারের এই মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করছেন। অনেকে লিখেছেন, তিনি শুধু পুলিশ বাহিনীর নয়, পুরো জাতির গর্ব।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ‘হানিট্র্যাপ’-এ আটকে পড়া এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করার দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করছিলেন সাংবাদিক তুহিন। এ সময় সংঘবদ্ধ একটি চক্র তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। পুলিশ এ ঘটনায় ৮ জনকে শনাক্ত করে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। মূল পরিকল্পনাকারী গোলাপি বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
তুহিনের হত্যাকাণ্ড সাংবাদিক সমাজকে শোকাহত করেছে এবং তার দুই সন্তানের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। এমন সময়ে এসপি আখতার উল আলমের উদ্যোগ মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
Comments