Image description

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৮ শিশুর মধ্যে ১২ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার শিশুদের অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়, কিন্তু গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তা নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নামঞ্জুর করেছিল।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয় এবং পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স ও ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। 

ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

একজন শিশুর বাবা জানান, তার ছেলে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করছিল এবং কাজের সময়ই পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, তার ছেলে সেদিন দুপুরে মাদ্রাসা থেকে ফিরে বাড়িতেই ছিল। আসরের নামাজের পর চটপটি খেতে বাইরে গেলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের কথা শোনেনি এবং ছেলেকে ছাড়িয়ে আনতে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া, জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।
 
গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে এবং এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। তিনি জানান, এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।