Image description

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে ২০২৫ সালের ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়’ দিবসের কর্মসূচি বয়কট করে কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকলে অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ এর সামনে সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা, আমার ক্যাম্পাস আমার ঘর, থাকব না আর যাযাবর, অন্যের ক্যাম্পাস সজ্জিত, আমরা কেনো বঞ্চিত, ক্যাম্পাস নিয়ে প্রহসন, মানি না মানবনা- এসব স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠেন।

এর আগে ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও রেজিস্ট্রারের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দায়িত্বে থাকা প্রফেসর ড. সুমন কান্তি বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলমান নিয়োগ পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। ২৭, ২৮ ও ২৯ জুলাই যথাক্রমে বাংলা, অর্থনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক পদে নির্ধারিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা আপাতত হচ্ছে না বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জনান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৎকালীন জমিদারির অন্তর্গত খাস জমিতেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মিত হওয়ার কথা। ভূমি অধিগ্রহণের ঝামেলা এবং পরিবেশের কোনোরূপ ক্ষতি ছাড়াই সেখানে নান্দনিক একটি ক্যাম্পাস নির্মাণ করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৮ বছর অতিক্রান্ত হলেও এর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে কোনো অর্থই বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। পরপর সাতবার ডিপিপি সংশোধন করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমান সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতিকে বিবেচনায় রেখে সর্বশেষ ৫১৯.১৫ কোটি (৫ শত ১৯ কোটি ১৫ লক্ষ) টাকার ডিপিপি উপস্থাপন করে, যা পরিকল্পনা বিভাগে গত ৭ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এর সভায় আলোচিত হয়। 

উক্ত একনেক সভায় সভাপতি হিসেবে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়টি কেবল স্থাপনের কথাই বলেননি, কবিগুরুর নামের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক গুণগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্থাপিত হয় সে ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন। 

উক্ত একনেক সভায় প্রায় সবাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ঐক্যমত্যে পৌঁছালেও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রস্তাবিত ক্যাম্পাসে এসে সরেজমিনে দেখতে চাইলে গত ১৬ জুন তিনি শাহজাদপুরের বুড়ি পোতাজিয়ায়(মৌজা) গিয়ে ক্যাম্পাসের স্থান দেখে গিয়ে প্রতিবেদন জমা দেন। উক্ত প্রতিবেদনে তিনি কী লিখলেন, আমরা তা জানি না। 

প্রধান উপদেষ্টার ইতিবাচক মনোভাব ও উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান-এর পরিদর্শনের পর একাধিক একনেক সভা অনুষ্ঠিত হলেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পটি এজেন্ডাভুক্ত না হওয়া দুরভিসন্ধিমূলক কি-না তা নিয়ে আশঙ্কার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। কেন বা কী কারণে এমনটি হচ্ছে, তার কোনো ব্যাখ্যাও জানায়নি বর্তমান সরকার। এটি কেবল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি উপেক্ষা নয়, এটি বাংলাদেশের বিপ্লবী ছাত্রসমাজের স্বার্থের প্রতি অবজ্ঞা।

এসময় আন্দেলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস নির্মানের দাবী না মানা হলে ২৭ জুলাই থেকে উত্তরবঙ্গের সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষনা দেন।