Image description

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি আবাসিক হোটেলে ১২ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগে মো. আল-আমিন (৩৪) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুক্রবার গাজীপুরের টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকা থেকে পিবিআই ঢাকা মেট্রো-দক্ষিণের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে শনিবার পিবিআই সদর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বলাৎকারের পর ওই কিশোরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।

পিবিআই জানিয়েছে, পথ হারানো ওই কিশোর বরিশালে যাওয়ার ঠিকানা জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে ঘাতক আল-আমিনের সঙ্গে পরিচিত হয়। এরপর আবাসিক হোটেলে নিয়ে ঘাতক আল-আমিন ও আরেকজন মিলে ভুক্তভোগী কিশোরকে বলাৎকার করে। এতে কিশোরটি অসুস্থ হয়ে পড়লে এবং যৌন নির্যাতনে বাধা দিলে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ১৪ জুলাই দুপুরে যাত্রাবাড়ীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। পরে পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের ক্রাইমসিন ইউনিট ছায়া তদন্ত শুরু করে, এতে লোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসে। পরিচয় শনাক্তের পর আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

গ্রেপ্তার আল-আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পিবিআই জানায়, গত ১২ জুলাই কমলাপুর রেলস্টেশনে নিহত কিশোরের সঙ্গে আসামিদের পরিচয় হয়। সেই কিশোর আসামিদের কাছে জানতে চায়, বরিশালের ট্রেন কখন ছাড়বে। জবাবে আসামিরা বলেন, বরিশালে ট্রেন যায় না। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গে আসামিদের আলাপ ও সখ্যতা গড়ে ওঠে।

পরিচয়ের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী জানায় সে একদিন ধরে না খেয়ে আছে। আল-আমিন তখন শিশুটিকে খাবার ও স্যান্ডেল কিনে দিয়ে সারাদিন তার সঙ্গে রাখে। পরে সন্ধ্যায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় যাত্রাবাড়ীর আনোয়ারা হোটেলের একটি কক্ষে। সেখানে প্রথমে আল-আমিন এবং পরে সাদ্দাম প্রবেশ করে।

পিবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে দুজন পর্যায়ক্রমে অস্বাভাবিক উপায়ে ভিকটিমের সঙ্গে যৌন সংগম করে। এতে ভুক্তভোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরদিন সকালে ফের যৌন সংগম করতে চাইলে ভিকটিম নিষেধ করে এবং নিজে অসুস্থ বলে জানায়। এরপর আল-আমিন ও সাদ্দাম তাকে একাধিকবার নির্যাতন করে অস্বাভাবিক উপায়ে যৌন সংগমের চেষ্টা করে। তারা ব্যর্থ হয়ে শারীরিক নির্যাতন করে তাকে হত্যা করে।

এদিকে, নিহত কিশোরের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তার বাড়ি বরিশাল জেলায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত করতে ভিকটিমের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে এবং পিবিআই বরিশাল জেলা শাখার সহায়তায় অনুসন্ধান চলছে বলে জানা গেছে।