
চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর-পাহাড়তলী থানা সংলগ্ন সাগরিকা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধ দখলে থাকা প্রায় ৩২০ কোটি টাকা মূল্যের ৩২ একর সরকারি জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর এই জায়গা ফিরে পেতে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
রবিবার (১৩ জুলাই) তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কাট্টলী ভূমি সার্কেলের সহকারী কমিশনার হুছাইন মুহাম্মদ, পতেঙ্গা ভূমি সার্কেলের সহকারী কমিশনার ফারিস্তা করিম এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. ফজলুল হাসান।
তথ্যটি নিশ্চিত করে কাট্টলী সার্কেল ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার হুছাইন মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্প এলাকার সরকারি জমি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। এসব জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান আজকে (রবিবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়েছে। আমরা সাগরিকা থেকে এ অভিযান শুরু করেছি। জায়গাটি বেশ বড়। তাই এ উচ্ছেদ অভিযান টানা তিন দিন, অর্থাৎ ১৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে।’
অভিযান সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দখলে থাকা এসব জমি উচ্ছেদে রবিবার থেকে অভিযান শুরু করেছি। অনেকেই উচ্ছেদ ঠেকাতে চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সরকার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আজকের অভিযানে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করছেন। স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে জমিগুলো দখলমুক্ত করে সেখানে পিলার ও কাটাতার দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হবে এবং বনায়ন কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
প্রসঙ্গত, এসব জমির একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতা। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম দখলে রেখেছিলেন ৭ একর জমি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক প্যানেল মেয়র নিছার উদ্দিন আহম্মেদ মঞ্জু, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জু, কাউন্সিলর আবুল হাসেম-এই তিনজনের অধীনে ছিল বাকি জমির দখল। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছিল কাভার্ডভ্যান ও স্কেভেটার ইয়ার্ড, গ্যারেজসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা।
Comments