
কক্সবাজার জেলা আদালতের হাজতখানায় চাঞ্চল্যকর অনিয়মের অভিযোগে দুই টিএসআইসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার দুর্ধর্ষ অপরাধী শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতের হাতে হাজতে থাকার সময় মুঠোফোন পৌঁছানোর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। একইসঙ্গে আদালতের হাজতে আসামিদের সাক্ষাৎ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আরও কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
ক্লোজড হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন; টিএসআই সুরেন দত্ত, টিএসআই আবদুল ওয়াহেদ এবং কনস্টেবল নাজম হায়দার, গোলাম মোস্তফা ও ইয়াছিন নূর।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৯ জুলাই) শাহীন ডাকাতকে কক্সবাজার জেলা আদালতে হাজিরা দিতে আনা হয়। এ সময় তার পকেটে মুঠোফোন দেখা গেলে বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে আসে। ছবি ও ভিডিওসহ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর পুলিশ প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। পরদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
শাহীন ডাকাতের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, ডাকাতি ও মাদকের মতো অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। গত ৫ জুলাই রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাকের আহমদের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর একটি যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কোর্ট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি অসাধু পুলিশ চক্র অর্থের বিনিময়ে আদালত হাজতে আসামিদের মোবাইল ফোন ব্যবহার ও সাক্ষাতের সুযোগসহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে আসছে।
কক্সবাজার আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী জানান, ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর পাঁচ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভ্যন্তরে এই ধরনের অনিয়ম আদালতের মর্যাদা ও বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
Comments