
অর্থ সহায়তা না পেয়ে রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর করেছেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজন। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যার পর ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত এই দপ্তরে প্রথমে তালা লাগান। পরে ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করেন তারা।
জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপের সহায়তা পাওয়ার আশায় দুপুরের পর থেকে আহতরা ফাউন্ডেশনের সামনে জড়ো হন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর সন্ধ্যায় ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর জানিয়ে দেন, আজ সহায়তা দেওয়া সম্ভব নয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রায় ২০-২৫ জন আহত ব্যক্তি প্রথমে অফিসে তালা লাগান, পরে এক কর্মচারীর ‘অশোভন আচরণে’ উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনেকগুলো চেয়ার এলোমেলো পড়ে আছে। পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে কাচের টুকরা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে।
জুলাই যোদ্ধা মামুন হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশনের এক কর্মী তাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ার কথা বললে সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর চালান। আগে তো জুলাই ফাউন্ডেশন ছিল না। আমাদের আহতদের জন্য এই জুলাই ফাউন্ডেশন। আমরা আহতরা চিকিৎসার অর্থের জন্য এখানে আবেদন করি। কিন্তু এখানে আসার পর আমাদের বারবার টাকা দেয়া হবে বলে ঘোরানো হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবত চিকিৎসাধীন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী? আজকে সাধারণ একটা বিষয় নিয়ে পুলিশ আমাদেরকে মেরেছে, জুলাই ফাউন্ডেশনে ফোন দেয়া হয়েছে, তখন এখান থেকে কেউ যায়নি। তো কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?
সাভার সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সাত মাস ধরে দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য ঘুরতেছি। এখানকার ভেতরের লোকদের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক ভালো, তাদেরকে আগে টাকা দেয়া হচ্ছে। যাদের সঙ্গে মামা-চাচার সম্পর্ক তারাই টাকা পাচ্ছে। আমাদের যারা গুরুতর আহত, দেশে চিকিৎসা নেই, বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছে তাদেরকে সেকেন্ড টাইমের (দ্বিতীয় ধাপের) টাকা দেয়া হচ্ছে না। জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও বারবার ডেট দিয়ে আমাদেরকে টাকা দিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে ফাউন্ডেশনের সিইও কামাল আকবর গণমাধ্যমকে বলেন, ওনাদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা যে জায়গা, সেটি পূরণ করা কষ্টকর। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহতদের প্রথম ধাপে টাকা দেয়া হয়েছে। যারা এখনো গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন, তাদের মধ্যে ৮০৬ জনকে দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেয়া হয়েছে। বাকিদেরকেও ধাপে ধাপে দেয়া হবে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সমাধান করার।
অফিস কক্ষে ভাংচুরের পর কামাল আকবরের সঙ্গে আলোচনায় বসেন আহতরা। সেখানে আলোচনায় রোববার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কামাল আকবর জানিয়েছেন।
Comments