জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে কাস্টমস কর্মকর্তাদের 'শাটডাউন' কর্মসূচি আগামীকাল, রোববারও (২৯ জুন) অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে 'মার্চ টু এনবিআর' কর্মসূচিও চলবে। যদিও আন্দোলনকারীরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী, তবে তাদের পূর্বশর্ত হলো এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। জানানো হয়, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই শাটডাউন কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
 
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে গত ২৫ মে সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তির আলোকে রাজস্ব সংস্কার সম্ভব নয়। তার অভিযোগ, চেয়ারম্যান "ফ্যাসিবাদের দোসর একটি বিশেষ গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে প্রতিভূ হিসেবে কাজ করছেন।"

আজ সকাল থেকেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) কোনো কাজ হচ্ছে না। ভবনের ভেতরে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারছেন না, ফলে এনবিআরের সব সেবা বন্ধ আছে। এছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল, ঢাকা কাস্টমস হাউসসহ দেশের সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমদানি-রপ্তানির সব ধরনের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

দুপুরের সংবাদ সম্মেলনে হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার আরও অভিযোগ করেন যে, পলাতক আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী যে ৪৪ জন আমলার তালিকা করা হয়েছে (যাদের মধ্যে ছয়জনকে এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে), তার মধ্যে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান ৩ নম্বরে আছেন। তিনি মনে করেন, "সংস্কারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে তিনি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করবেন, এটাই স্বাভাবিক।"

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২১ ও ২২ জুন একাধিক আদেশের মাধ্যমে রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের "প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলকভাবে" বদলি করা হয়েছে। কর্মসূচিতে সম্মুখসারিতে নেতৃত্ব দেওয়া পাঁচজন আয়কর কর্মকর্তাকে ঢাকার বাইরে অপেক্ষাকৃত কম রাজস্ব সম্ভাবনাময় দপ্তরে 'স্ট্যান্ড রিলিজ' করা হয়েছে। এমনকি আদেশে প্রাপ্য যোগদানকাল না দিয়েই পরবর্তী কর্মদিবসে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগদান করতে বলা হয়েছে, যা চাকরির বিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থী ও অবৈধ বলে দাবি করা হয়।

হাছান মুহম্মদের অভিযোগ, এই অবৈধ আদেশের মাধ্যমে এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত জিঘাংসা চরিতার্থ করছেন। তার এহেন কর্মকাণ্ড "দুরভিসন্ধিমূলক" এবং তিনি নিপীড়নমূলক বদলিসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রাজস্বব্যবস্থা সংস্কারের পরিবেশ বিনষ্ট করছেন। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।