
জনগণের ঐক্যবদ্ধতা থাকলে ভবিষ্যতে কোনো সরকারই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, "আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকবো, ততদিন এই বাংলাদেশে আর কোনো হাসিনা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।"
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সারজিস আলম এই মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম তার বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে "লক্ষ ছাত্র-জনতার উপস্থিতি"কে জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "আমরা যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ওই স্মৃতিকে নিজেদের বুকে ধারণ করে শহীদের যে আত্মত্যাগ, জুলাই যোদ্ধাদের যে রক্ত দেওয়া, সেগুলোকে আমরা যতক্ষণ ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে চলবো, ততক্ষণ কারো প্রপাগান্ডা বা বিদেশি এজেন্টের চক্রান্তে আমাদের কিছু আসে যায় না।"
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ২০২৪ সালের পরবর্তী বাংলাদেশে যারা অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধা ছিলেন, তারা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, তাহলে "আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট কোনো নামে, কোনো ব্যক্তিকে সামনে রেখে, কোনো দলকে সামনে রেখে দাঁড়াতে পারবে না।"
সারজিস আলম ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের শৃঙ্খলার প্রশংসা করে বলেন, "আজ যখন আমি আসছি রাস্তার আশপাশের প্রত্যেকটি মোড়ে আমার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের কাজ করছেন। এটাই হচ্ছে দৃষ্টান্ত যে আমরা কাজ করব। আমাদের রাজনৈতিক সমাবেশ করব। একই সঙ্গে জনগণের যে হয়রানি সেটাও আমাদের মাথায় থাকবে।" তিনি পূর্ববর্তী সমাবেশের পর মাঠ পরিষ্কার করার উদাহরণ টেনে বলেন, "এটাই হচ্ছে আগামী বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত যে আমাদের দাঁড়া সাময়িক যদি কোনো সমস্যা হয়, আমরা আবার ঐক্যবদ্ধভাবে সেই সমস্যার সমাধান করবো।"
সারজিস স্মরণ করিয়ে দেন যে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের পাঞ্জাবি, পায়জামা, টুপি দেখে "টার্গেট কিলিং" করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "আমার মাদরাসার অসংখ্য ভাই এই টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন। আগামীর বাংলাদেশে কেউ যেন কাউকে ট্যাগিং করে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার না করতে পারেন, সে বিষয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।"
সারজিস আলম সংস্কার ও বিচারকে তাদের লড়াইয়ের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য পিআর ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, "এই যে পিআর, আগামী বাংলাদেশের সংসদে আমরা যদি আসলেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব চাই তাহলে আগামীতে এই পিআর নিয়ে আমাদের আরও জোরদার কাজ করতে হবে।"
এনসিপির পক্ষ থেকে তিনি অঙ্গীকার করে বলেন, "বাংলাদেশের প্রশ্নে, জনগণের প্রশ্নে আপনারা যদি এক থাকেন, আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ’২৪-এর মতো এনসিপি আবারও আগামীর বাংলাদেশে লড়াই করবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের এই বাংলাদেশের ’২৪ এর অভ্যুত্থানের স্পিরিটের প্রশ্নে, ওই খুনিদের বিচারের প্রশ্নে, রাষ্ট্রের সংস্কারের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাব। আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকব, ততদিন এই বাংলাদেশে আর কোনো হাসিনা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। ইনশা আল্লাহ আপনাদের সঙ্গে আমাদের আবারও দেখা হবে রাজপথের লড়াইয়ে অথবা বিজয়ে। ততদিন পর্যন্ত সত্যের সঙ্গে থাকবেন, ন্যায়ের সঙ্গে থাকবেন। যত বড় খুনি, যত বড় সাহসী, যত বড় নেতাই ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার চেষ্টা করুক না কেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করবো ইনশা আল্লাহ।"
Comments