ছাত্রদল কর্মী ইসমাঈলের জানাজা সম্পন্ন, খুনির ফাঁসি দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ

নরসিংদীর পলাশে ছাত্রদল-বিএনপির সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ছাত্রদল কর্মী ঈসমাইল হোসেন (২৬) এর জানাজা নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (২২ জুন) বিকাল ৪ টার দিকে পলাশ বাসস্ট্যান্ডে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার খানেপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাদার কবরের পাশে ইসমাঈল হোসেনকে দাফন করা হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) দুপুর ২ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ ছয় দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ইসমাঈল।
এ দিকে জানাজা নামাজ শেষে পলাশ উপজেলা বিএনপি ও এর সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইসমাঈলের খুনি জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের ফাঁসি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে এবং তার অনুসারী সকল সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল পালন করে।
পলাশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সাত্তারের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি পলাশ বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পলাশ থানার ফটকে গিয়ে শেষ হয়।
এতে অংশগ্রহণ করেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর সাইফুল হক, সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক বাহাউদ্দীন ভূইয়া মিল্টন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকী, ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আলম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন,পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন সোহেল, সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান পাপন, ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আরিফসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এর আগে, রোববার (১৫ জুন) সন্ধ্যার দিকে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিএডিসির মোড়ে পলাশ উপজেলা ছাত্রদল ও জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের শোডাউনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এছাড়া ছাত্রদল কর্মী ইসমাঈল ও পথচারী সোহেল মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে, আহত ঈসমাইলকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঈসমাইল হাসপাতালে ভর্তির ৬ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইসমাঈলের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রোববার দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলে বিকাল ৪ টার দিকে পলাশ বাসস্ট্যান্ডে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের প্রায় কয়েক হাজার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য; এ ঘটনায় (১৫ জুন) রোববার রাতেই ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সিয়াম মিয়া বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর কবির জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামী করে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ঘটনার দুই দিন পর (১৭ জুন) জুয়েলের পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনার জেরে গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বিএনপি নেতা জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে গ্রেপ্তারকৃত ফজলুল কবির জুয়েল নরসিংদী জেলখানায় রয়েছে।
Comments