Image description

নীলফামারীর সৈয়দপুরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে সুপারির দাম। ঈদের পর পানের দাম কিছুটা কমলেও সুপারির দাম বাড়ছে হুহু করে। কেউ কেউ বলছেন সুপারি মহাজনেরা মজুদ করে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেছেন। ফলে দাম বেড়েছে সুপারির। এতে করে মাথায় হাত পড়েছে পানসেবীদের।  

সৈয়দপুর শহরের গুয়াপান হাট্টিতে সরেজমিনে দেখা যায়, বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা গুয়া ও শুকনা সুপারি। কোরবানি ঈদের আগে ৮০টির এক পন কাঁচা গুয়া (সুপারি) বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকায়।  সেই গুয়া এখন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ টাকা পন দরে।  অর্থাৎ পনে দাম বেড়েছে ৮০০ টাকা। একেকটি কাঁচা গুয়া বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ টাকায়।  

পানিতে পচিয়ে রাখা মজা গুয়ার দাম ছিলো ৩০০ টাকা পন। ঈদের পর ওই গুয়া বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা দরে।  ফলে দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।  ঈদের আগে শুকনো সুপারির কেজি ছিলো ৫০০ টাকা যা এখন ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।  

ব্যবসায়ীরা জানান, সৈয়দপুর শহরের পাঁচমাথা মোড়ের ভেতর দিকে পান-সুপারির বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। যেখানে গড়ে উঠেছে শতাধিক পান-সুপারির পাইকারি ও খুচরা দোকান। পান সুপারি ছাড়াও ওই বাজারে মিলে মজাদার পান মসলা, জর্দা, খয়ের, চুনসহ পান আওয়ার নানা মসলা।  

উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা ওই বাজারে আসেন কেনাবেচার উদ্দেশ্যে। বাজারটিতে ফেনী, ভোলা, বরিশাল, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য নিয়ে আসেন। এছাড়া নীলফামারীর চিলাহাটি, পঞ্চগড়সহ আশেপাশের জেলা থেকে সুপারি আসে বাজারটিতে। জেলার চিলাহাটি ও ঢেলাপীর পাইকারি বাজারেও সুপারির দাম বেড়েছে।  

ওই বাজারের পান ব্যবসায়ী জয়নুল আবেদীন জানান, সৈয়দপুরের গুয়াহাটি থেকে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার পান সুপারি বিক্রি হয়। ঈদের পর পান ও গুয়ার মজুদ কমে এসেছে। ফলে দাম বেড়েই চলেছে।

সুপারি ব্যবসায়ী ধনির চৌধুরী জানান, বাজারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। ঈদের পর সঙ্কটে পান ও সুপারির দাম বেড়েছে। 

পান ব্যবসায়ী ফজলার রহমান জানান, ঈদের আগে বড় পান ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিড়া (৮০টি) দরে বিক্রি হতো। আর ছোটপান বিক্রি হয়েছে ২০ টাকায়। ছোট পানের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বড়পানের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা প্রতি বিড়ায়। এছাড়া ঈদের পর বিয়েশাদী অন্যান্য কারণে গুয়া ও পানের চাহিদার সাথে দামও বেড়েছে।  

শহরের নয়াটোলার বাসিন্দা ও পানসেবী আব্দুস সাত্তার জানান, বড় মহাজনরা ঈদের আগে তাদের গুদামে বিপুল পরিমাণ সুপারি মজুদ করে। এতে বাজারে সুপারির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ঈদের পর ট্রাক স্বল্পতার কারণে দূরবর্তী স্থান থেকে সুপারি ও পান আনানেওয়া কমেছে। এ সুযোগে সৈয়দপুরের মহাজনরা দাম বাড়িয়ে দিয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন।  

সৈয়দপুর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন বলেন, বাজার মনিটরিং ও তদারকির অভাবে পান ও সুপারির বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। বিশেষ করে ঈদের পর ওই বাজার অনেক বেড়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারি দরকার বলে জানান তিনি।