Image description

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিরপুর কার্যালয়কে 'টর্চার সেল' বানিয়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়ীকে ধরে এনে নির্যাতন করে ব্লাঙ্ক চেক ও স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদমান সানজিদ ও রিফাতুল হক শাওনের বিরুদ্ধে। তাদের সঙ্গে শাহ আলী থানার সদস্যসচিব পারভেজসহ আট থেকে দশ জন জড়িত বলে অভিযোগ। দেশ টিভির এক ভিডিও প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ভিডিও ফুটেজ এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্তদের অধিকাংশ সদস্যই এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ছোট ভাই পরিচয়ে মিরপুরে প্রভাব বিস্তার করেন। তারা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে তোলা একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মকর্তাদের দেখিয়ে প্রভাব খাটান বলে অভিযোগ।

অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে মিরপুরে অবস্থিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি জানান, নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি দেখিয়ে, তার ছোট ভাই দাবি করে বদলিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তারা চাপ সৃষ্টি করেন।

একজন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, "আমাকে ধরে এনে ইচ্ছামতো মারছে, থাপ্পড় মারছে।"

শুধু বিভিন্ন দপ্তরে নয়, তাদের ত্রাসের রাজত্ব থেকে বাদ পড়ছে না মিরপুরের বিভিন্ন বসতবাড়িও। কিছুদিন আগে হামলার পাশাপাশি তারা লুটপাটও চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার বিচার চাওয়া তো দূরে থাক, সেই ঘটনা মনে করতেই ভয়ে আঁতকে ওঠেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীরা বলেন, "আমরা মেন্টালি অভিযোগ জানানোর পর্যায়ে নাই। আমাদের বাচ্চারা শেষ হয়ে যাবে। বাচ্চাগুলা এখনো ট্রমার কারণে ঘুমাতে পারে না। ওরা জাস্ট জানতে পারলেই আমাদের বাসার সামনে সব নিয়ে হাজির হবে। আপনারা তো দুজনের নাম দিয়েছেন। অসংখ্য লোক রয়েছে এদের সঙ্গে।"

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, তিনি অভিযুক্তদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মুখপাত্র উমামা ফাতিমাও ফোন রিসিভ করেননি এবং ফোনে পাঠানো মেসেজের জবাবও দেননি।

তাহলে কি নাহিদ ইসলামের সঙ্গে তোলা ছবি পুঁজি করেই মিরপুরে ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তুলেছেন সাদমান-শাওনরা? জানতে চাইলে তারা দাবি করেন, কারো পরিচয়ে তারা প্রভাব বিস্তার করেননি। বরং আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার 'অপরাধে' তারা হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন। তারা আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা তথ্য পাচার করেন।