
লুকোচুরিই তো প্রেমের আসল মজা। যেদিন থেকে প্রেম স্বীকৃতি পেয়ে যায় সেদিন থেকেই প্রেমের মজা চলে যায়। তবে প্রেমের মরা জলে ডুবে না একথাটি বাস্তবে রূপ দিতেই তাদের প্রেম ভালোবাসা। সেই প্রেম ভালোবাসা বিনিময় করতে গিয়ে রবিবার (১৫ জুন) রাতে প্রেমিকার বাড়ীতে প্রেমিক প্রেমিকা কে হাতেনাতে আটক করলো এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের দয়ারামবাড়ী (হাজরাবাড়ী) গ্রামে।
স্থানীয়রা জানাযায়, দয়ারামবাড়ী (হাজরাবাড়ী) এলাকার আব্দুর রহিমের মেয়ে দশম শ্রেণী পড়ুয়া মাদ্রাসার কিশোরী ছাত্রী ছদ্বনাম (মালা) (১৫) ও পাশের নরিল্যা গ্রামের সরুজ্জামান সুরুজের কলেজ পড়ুয়া কিশোর ছেলে মেহেদী হাসান (১৭) এর সাথে দীর্ঘদিন যাবত প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক চলে আসছিলো। রবিবার রাতে ওই কিশোরীর মা-বাবা বাড়ী না থাকার সুযোগে দুজনে মোবাইলে যোগাযোগ করে কলেজ ছাত্র প্রেমিক প্রেমিকা মালা’র বাড়ীতে এসে ঘরে ঢুকে প্রেমের ভালোবাসা বিনিময় কালে এক রুমের ভিতরে আপত্তিকর অবস্থায় তাদের দু’জন কে ধরে ফেলে স্থানীয় এলাকাবাসী। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গতকাল রাতেই পায়তারা চালায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
এঘটনায় আটক হওয়া প্রেমিক মেহেদী হাসান সকল ঘটনা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, আমার প্রেমিকার সাথে আমার দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। মাঝে মধ্যেই দেখা সাক্ষাৎ ও শারীরিক সর্ম্পক হয়েছে আমাদের। গতকাল রবিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় আমি আমার প্রেমিকার সাথে তার বাড়ীর সামনে দেখা করতে আসলে স্থানীয় কিছু লোকজন আমাকে ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে আমি আমার প্রেমিকার বাড়ীর ভিতরে ঢুকে যাই। গতকাল সারা রাতদিন পার হওয়ার পরেও আমাকে এখনো ছেড়ে দেয়নি বলে তিনি আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। প্রেমিক মেহেদী নরিল্যা কলেজের এইচএসসি’র ১ম বর্ষের ছাত্র।
প্রেমিকা মালা জানান, মেহেদীর সাথে প্রায় ১ বছর যাবত আমার প্রেম ভালোবাসার সর্ম্পক। গতকাল রাতে আমার সাথে দেখা করার জন্য আসে এসময় স্থানীয় জনতা আমাদের কে ধরে ফেলে। তবে আমি মেহেদীকে মন প্রাণ উজাড় করে দিয়ে ভালোবেসেছি। ও যদি আমাকে বিয়ে না করে আমি আত্মহত্যা করে ভালোবাসার প্রমাণ দিয়ে যাবো। প্রেমিকা মালা তিনি ভাইঘাট দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
ওই কিশোরীর মা সোনিয়া বেগম জানান, আমার কিশোরী মেয়েকে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে প্রেমের সর্ম্পক করেছে মেহেদী । গতকাল রবিবার রাত ৯ টার দিকে আমি আমার ছোট ছেলের মাদ্রাসায় খাবার দিতে গেলে এই সুযোগে ওই ছেলে মেহেদী আমার মেয়ের সাথে দেখা করতে বাড়ী আসে। এসমন সময় বাড়ী থেকে ফোন করে দ্রুত বাড়ী আসতে বলে। বাড়ী এসে উৎসুক জনতার কাছ থেকে জানতে পারি ছেলে মেয়ে দুজন কে একত্রে ধরে ফেলেছে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ সহ প্রশাসনের কাছে আমি ওই ছেলের বিচার চাই। আমরা ধনবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এঘটনায় ওই অভিযুক্ত কলেজ পড়ুয়া কিশোর মেহেদীর বাড়ীতে জানতে গেলে তার বাবা সুরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, আমার ছোট ছেলে সে অনেক ভালো। তবে আমি খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় কিছু লোকজন আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং আমার ছেলে কে ছেড়ে দিবে বলে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন তারা। তবে তিনি প্রাণের ভয়ের কারণে তাদের নাম প্রকাশ করেনি। আমার ছেলেকে তারা আটক করে রেখেছে গতকাল রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত। আমি থানায় আমার ছেলে উদ্ধারের জন্য লিখিত অভিযোগ দিবো। সেই সাথে আমার ছেলে উদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ধোপাখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন আলম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ছেলে মেয়ে দুজনেই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। যে ঘটনা ঘটেছে আইন অনুযায়ী তার উপযুক্ত বিচার হওয়া দরকার।
এ ঘটনায় ধোপাখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপি’র নেতা কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টু সঠিক বিচার দাবী করেন।
ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এস এম শহিদুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মেয়ে বা তার পরিবার অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments