গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও কর্মদক্ষতা যাচাই করার জন্য আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা উচিত। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তর বাড্ডার সুবাস্ত টাওয়ারের সামনে একটি মশাল মিছিল শেষে সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।

আবু হানিফ পটুয়াখালীর সাম্প্রতিক একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, "পটুয়াখালীর ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে ডিসিকে অবহিত করার পরও ডিসি কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং তিনি বিএনপির কর্মীর মতো আচরণ করেছেন।" তিনি আরও অভিযোগ করেন, "এই ডিসি সরকারি সব অনুদান বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভাগ-বাটোয়ারা করে ভক্ষণ করেন।" অবিলম্বে পটুয়াখালীর ডিসিকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা প্রশাসনকে নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, "বিগত সময়ে প্রশাসন আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছে। এখন সেই প্রশাসনের বড় একটা অংশ বিএনপির হয়ে কাজ করছে।" আবু হানিফ আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে নির্বাচন ঘনিয়ে এলে বিএনপির প্রতি প্রশাসনের সমর্থন আরও বাড়তে পারে। 

তার মতে, এই প্রশাসন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি আরও যোগ করেন, "বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল, এখনো স্বাভাবিক হয়নি। আগে প্রশাসন যেভাবে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করত এখন সেভাবে বিএনপির হয়ে কাজ করছে।" এই পরিস্থিতিতে, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা যাচাই এবং তাদের ফিটনেস পরীক্ষার জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে উল্লেখ করেন।

গত পরশু রাতে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরকে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের নেতাকর্মীদের দ্বারা অবরুদ্ধ করে রাখা এবং একই রাতে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের বিভিন্ন ইউনিয়ন কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আবু হানিফ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "এক দিন পেরিয়ে গেলেও বিএনপি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।" তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে গণ অধিকার পরিষদ বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল এবং সেই হিসেবে তারা বিএনপির মিত্র।

আবু হানিফ বলেন, "মিত্র দলের শীর্ষ নেতাকে অবরুদ্ধ করে রাখা, সেই দলের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করার পরও বিএনপি এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নুরুল হক নুরের সঙ্গে বিএনপির এই আচরণ মিত্রদের জন্য সংকেত। ভবিষ্যতে বিএনপি মিত্রদের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে পারে, এটা তার নমুনা।"

গণ অধিকার পরিষদ বাড্ডা থানার সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি আবির ইসলাম সবুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সহসভাপতি আবু হানিফ হৃদয়, আরিফুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ জিলু খান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সহ সভাপতি শাকিল আহমেদ তিয়াস, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, যুব অধিকার অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠু প্রমুখ।