Image description

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন বিশেষ শ্রেণির ব্যক্তিকে পাসপোর্ট ইস্যু এবং নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন বিভাগে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই তিন শ্রেণির ব্যক্তিরা আর পাসপোর্ট সুবিধা পাবেন না।

পাসপোর্ট সুবিধা হারানো তিন শ্রেণি হলেন:

১. মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন। এদের তালিকা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে সংগ্রহ করা হবে।

২. দেশবিদেশে পলাতক ব্যক্তি: যারা দেশের আইনি ব্যবস্থা এড়িয়ে প্রতিবেশী ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন, তারা পাসপোর্ট নবায়ন বা নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

৩. ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি: ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরও পাসপোর্ট সুবিধা বন্ধ থাকবে। পলাতক এবং ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের নামের তালিকা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে পাঠানো হবে।

গত ৪ মে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়। সভার আলোচনায় উঠে আসে যে, এই ধরনের ব্যক্তিদের পাসপোর্ট সুবিধা প্রদান দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক-২ শাখা গত ১৫ মে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে কোর কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পলাতকদের নামের তালিকা দ্রুত প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়িত হবে। যদিও বৈঠকে এ বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হয়েছিল, তবে ধারণা করা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত আদালতে দোষী প্রমাণিত হলেই পাসপোর্ট দেওয়া বন্ধ করা হবে। সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে সংশ্লিষ্ট মহল।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, চিফ হুইপ, সংসদ সদস্য, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, উপনেতা ও উপদেষ্টা পদমর্যাদার ব্যক্তিদের দেওয়া কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছিল।