Image description

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের পলাগাছ এলাকার এজ-ফর-প্লান্টে পড়ে থাকা একটি দুর্লভ উদ্ধারযান এখন পরিণত হয়েছে এক নিদারুণ উদাসীনতার প্রতীক। আন্তর্জাতিক মানের জাপানি প্রযুক্তির ‘ল্যাডার মরিতা’ নামের এই যানটি ১৪ তলা পর্যন্ত উঁচুতে পৌঁছাতে সক্ষম এবং এটি মূলত অগ্নিকান্ড বা দুর্যোগের সময় উদ্ধার অভিযানে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল।

কথিত আছে, এটি সাবেক মেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তাঁর ব্যক্তিগত অর্থায়নে বিদেশ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। তবে জুলাই বিপ্লবের পর জাহাঙ্গীরের রাজনৈতিক ছায়া ম্লান হয়ে যেতেই এই মূল্যবান সম্পদ পড়ে রয়েছে অযত্ন অবহেলায়, নেই রক্ষণাবেক্ষণ, নেই নিরাপত্তা, নেই ব্যবহারের কোনো উদ্যোগ। বর্তমানে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যমানের এই যন্ত্রাংশ জঞ্জাল আর ধুলায় ঢাকা পড়ে অকেজো হয়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘ল্যাডার মরিতা’ বাংলাদেশের মতো দেশে একটি দুর্লভ ও অপরিহার্য উদ্ধারযান। অথচ গাজীপুরের মতো শিল্প ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরে এটি একবারও কাজে লাগানো হয়নি।

এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক শরিফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের এই দুর্লভ যানটি বাংলাদেশে মাত্র চার-পাঁচটি রয়েছে। এত বড় একটি সম্পদ পড়ে থেকে নষ্ট হওয়া অনুচিত। আমি ইতিমধ্যে গাজীপুর জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি যাতে যানটি যথাযথভাবে ব্যবহারের আওতায় আনা যায়।”

এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই দায় এড়ানোর মতো। ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সিটি কর্পোরেশনের বিষয় সিটি কর্পোরেশনকে জিজ্ঞেস করেন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া আমি সিটি কর্পোরেশনের বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলবো না। এই বিষয়টি নিয়ে আপাতত আমি কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।”

এই বক্তব্যে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কারণ একটি সিটি কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকার গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধারযান অবহেলায় নষ্ট হলে তা শুধুমাত্র স্থানীয় সরকারের নয়, সমন্বয়কারী প্রশাসনেরও নজরে আসা উচিত। প্রশ্ন উঠছে, ‘এ ধরনের উদাসীনতা এবং দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি কতোদিন চলবে?’

নগরবাসীর দাবি, এখনই সময় বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরার, যাতে ‘ল্যাডার মরিতা’ দ্রুত সচল হয় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নগরবাসী সঠিক সেবা পেতে পারে।