
দেশের একমাত্র অত্যাধুনিক সরকারি চক্ষু চিকিৎসাকেন্দ্র ‘জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল’ গত ১৩ দিন ধরে বন্ধ। সেখানে অবস্থান করছেন শুধু ‘জুলাই আন্দোলনে’ আহত কয়েকজন, যাদের জন্য নিয়মিত খাবার দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ৬০০ কোটি টাকার এ হাসপাতাল এখন কার্যত আবাসিক হোটেলে পরিণত হয়েছে। প্রতিবেদন জাগো নিউজের।
জাগো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৮ মে এক ‘ভুল বোঝাবুঝি’ থেকে তারা চিকিৎসক-নার্সদের ওপর হামলা চালিয়ে হাসপাতাল দখল করে নেন। এরপর থেকে কেউ নিরাপত্তার ভয়ে হাসপাতালে আসছেন না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। ৪ জুন পুলিশের পাহারায় চালু হয় জরুরি বিভাগ।
মেডিক্যাল বোর্ড গঠিত হয়, যারা দেখেন বেশির ভাগ রোগীর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই। তারা রিলিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও আহতরা তা মানেনি। বরং তাদের দাবির প্রতি সহমত জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত পরিচালককে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। রিলিজের কাগজ ছিঁড়ে ফেলা হয়।
তারা সাফ জানায়, ঢাকায় থাকার জায়গা নেই, তাই হাসপাতালই তাদের আশ্রয়স্থল।
মেডিক্যাল বোর্ড বলেছে, তাদের চিকিৎসা চলমান ও সন্তোষজনক, হাসপাতালে থাকা জরুরি নয়। পুনর্বাসনের সুপারিশও করেছে তারা। কিন্তু আহতদের একটি অংশ দাবি করছে, তারা হাসপাতালেই থাকবেন, যাতে সরকার তাদের দাবি মানতে বাধ্য হয়। কেউ কেউ আর্থিক লেনদেন, নিয়োগ বা টেন্ডার সংক্রান্ত তদবিরেও জড়িয়ে পড়েছেন।
আবার কয়েকজনের আইনগত সমস্যা থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতেও তারা হাসপাতালে অবস্থান করছেন।
চিকিৎসকদের ভাষ্য, আহতদের অনেকে চিকিৎসা নিয়ে নানা অজুহাত দিচ্ছেন, কেউ কেউ বিদেশ থেকেও চিকিৎসা নিয়ে ফিরেও অসন্তুষ্ট। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার রোগী সেবা পাচ্ছেন না।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকার ও সংশ্লিষ্টরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কার্যকর সমাধান হয়নি। ঈদের আগে অধিকাংশ আহত বাড়ি গেলেও তারা রিলিজ নেয়নি, সুবিধামতো সময়ে ফিরে আসবেন বলেই জানিয়েছেন। সরকার বলছে, বিষয়টি সংবেদনশীল, সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Comments