Image description

ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন কোন গোষ্ঠীর স্বার্থে, এই প্রশ্ন রেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দাবি করেছেন, ৯০ শতাংশ রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচনের ‘সিদ্ধান্ত দিয়েছে’।

রবিবার (৮ জুন) নগরীর মেহেদীবাগের বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এই সরকারের অধীনে আগামী দিনে নির্বাচন করা সম্ভব হবে কিনা, এই প্রশ্ন কিন্তু মানুষের মনে জেগেছে।”

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের উদ্যোগের মধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবি করে আসছে বিএনপি।

শুক্রবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সরকারপ্রধান বলেছেন, “বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন সংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আমি আজ দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করছি যে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যে কোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে।”

এর প্রতিক্রিয়ায় ‘হতাশা’ প্রকাশ করে বিএনপি বলেছে এপ্রিল নির্বাচনের ‘উপযোগী নয়’। দলটি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আমার মতে ৯০ শতাংশের উপর রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তারা তাদের প্রস্তাব, তাদের মতামত পরিষ্কার করেছে।

“কারণ আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে আমাদের সংস্কার কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। এর বেশি লাগার কোনো কারণ নাই।”

বিচার কাজের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বিচার কার্য চলছে, বিচার বিভাগের অধীনে। একটা বিচারালয়ে বিচার চলছে। সুতরাং সরকার আসবে যাবে, বিচার অব্যাহত থাকবে।”

যাদের এখনও বিচারের আওতায় আনা যায়নি, সে জন্য ডিসেম্বরের পর্যন্ত সরকার সুযোগ পাচ্ছে তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, “সরকার যদি তারপরও আনতে না পারে, বিএনপি আসলে বাকি যারা থাকবে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে।”

বাংলাদেশে বিএনপির থেকে বেশি আর কোনো দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি মন্তব্য করে দলটি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “বিএনপির দায়িত্ব হচ্ছে যারা এই নিপীড়ন নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিল তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। আর কেউ করুক আর না করুক আমরা করব। আর এর পরে নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই।”

এখন সব কাজ সমাপ্তির দিকে, তাই নির্বাচন কেন ডিসেম্বরের পরে, কেন আগে নয়, এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “অনেকের মতে তো এগুলো সমাধানের পর অক্টোবর-নভেম্বরে নির্বাচন হয়ে যাওয়ার কথা। তাহলে কেন ডিসেম্বরের পরে? এই প্রশ্নটা সকলের মনে জেগেছে। কার স্বার্থে ডিসেম্বরের পরে? কোন গোষ্ঠীর স্বার্থে?

“ওই গোষ্ঠীর স্বার্থে যদি ৯০ শতাংশ রাজনৈতিক দলকে উপক্ষো করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়, তাহলে সন্দেহ মানুষের মনে জাগবে।”

আমীর খসরু বলেন, “তারা যেভাবে প্রভাবিত হচ্ছে ওই গোষ্ঠীর স্বার্থে। তাহলে আগামী দিনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশে হবে কিনা এই প্রশ্ন মানুষের মনে জেগেছে। এই সরকারের অধীনে আগামী দিনে নির্বাচন করা সম্ভব হবে কিনা এই প্রশ্ন কিন্তু মানুষের মনে জেগেছে।”

দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় দাবি করে তিনি বলেন, “ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার কোন যুক্তি নাই। ডিসেম্বরের পরে গেলে যেটা হবে, রমজান মাস আমাদের ত্যাগের-সংযমের মাস। ধর্মীয় অনুভূতির মাস।

“ওই মাসে আমরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ড করতে চাই না। এরপরে পরীক্ষা। তারপরে আবহাওয়াজনিত সমস্যা, ঘূর্ণিঝড়। সুতরাং ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা নির্বাচন চাই। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত।” ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে এদিন বিএনপির নেতাকর্মীরা আমীর খসরুর বাসায় আসেন।