Image description

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এতে শিশুসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫ জন। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত ১০টার দিকে বোয়ালখালী উপজেলার সেতুর পূর্ব প্রান্তে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, সেতুর ওপর একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট হয়ে যানজট তৈরি হলে ট্রেনটির গতিরোধ হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী ট্রেনের সেতুতে ওঠার আগে পূর্ব প্রান্তে থেমে লাইনম্যানের সংকেত নেওয়ার কথা থাকলেও, চালক সেই নিয়ম উপেক্ষা করে সোজা সেতুতে উঠে যান।

ফলে সেতুর ওপর থাকা সিএনজি, মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে ট্রেনটি এগিয়ে যায়, এতে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চান্দগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের ইউনিট ও রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম চালায়।
 
দুর্ঘটনার বিষয়ে গুমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার আজম উদ্দিন বলেন, ট্রেনটি দ্রুতগতিতে সেতুর ওপর উঠে গিয়েছিল। সেতুর ওপর সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ছিল। সেতুর ওপর একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এ কারণে সব গাড়ি সেতু থেকে নামতে পারেনি।

ট্রেনচালক সংকেত অমান্য করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আজম উদ্দিন বলেন, নিয়ম হলো ট্রেন পূর্ব প্রান্তে এসে দাঁড়াবে। এরপর লাইনম্যানের সংকেত নিয়ে সেতুতে উঠবে। কিন্তু ট্রেনচালক এ নিয়ম না মেনে দ্রুতগতিতে সেতুতে উঠে যান। আবার উল্টো দিক থেকে গাড়ি আসছিল। এ কারণে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন শিশু। সবাইকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে, দুর্ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্রাথমিকভাবে চার রেলকর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার (৬ জুন) সকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (সিনিয়র তথ্য অফিসার) রেজাউল করিম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বরখাস্ত হওয়ারা হলেন- ট্রেনের গার্ড সোহেল রানা (হেড কোয়ার্টার, চট্টগ্রাম), লোকোমাস্টার গোলাম রসুল, সহকারী লোকোমাস্টার আমিন উল্লাহ এবং অস্থায়ী গেটকিপার মাহবুব (টিএলআর)।

গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও)। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ডিএমই (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ ও বিভাগীয় চিকিৎসক (পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম)। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।