Image description

কুরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) হিজরতের পর প্রতি বছর কুরবানি করেছেন। প্রতি বছর ঈদুল আজহার দিনগুলোর নির্ধারিত সময়ে কুরবানি আদায় করা হয়।

তবে কুরবানি সব মুসলমানের ওপর ওয়াজিব নয়। এটি কেবল সেইসব মুসলমানের ওপর ওয়াজিব, যারা আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান, যাদের কাছে মৌলিক প্রয়োজনের বাইরে ‘নেসাব’ পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৩১২৩)

এই প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে- যদি কোনো ব্যক্তি কুরবানির সময় ঋণগ্রস্ত থাকে, তাহলে কি তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে? ইসলামি ফিকহবিদরা এ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।

যদি কোনো ব্যক্তি ঈদুল আজহার দিনগুলোয় সাময়িকভাবে ঋণগ্রস্ত থাকেন এবং চলতি বছর পরিশোধযোগ্য ঋণের অংশ বাদ দেয়ার পর তার হাতে ‘নেসাব’ পরিমাণ সম্পদ অবশিষ্ট না থাকে, তাহলে তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না। কারণ, শরিয়তের দৃষ্টিতে তিনি আর্থিকভাবে সক্ষম বলে বিবেচিত নন।

অন্যদিকে যদি কোনো ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও তার কাছে এমন পরিমাণ সম্পদ থাকে যে, চলতি বছর পরিশোধযোগ্য ঋণ বাদ দেয়ার পরও তার হাতে ‘নেসাব’ পরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি সম্পদ অবশিষ্ট থাকে, তাহলে তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ, ঋণ থাকলেই কুরবানি থেকে অব্যাহতি পাওয়া যাবে না, বরং মূল বিবেচ্য বিষয় হলো পরিশোধযোগ্য ঋণের অংশ বাদ দেয়ার পর ‘নেসাব’ পরিমাণ সম্পদ তার হাতে অবশিষ্ট থাকে কিনা। (বাদায়িউস সানায়ি, ৪/১৯৬; আল-ফাতাওয়াল হিন্দিয়্যা, ৫/২৯২)

সুতরাং কুরবানি আর্থিক ইবাদত হওয়ায় তা ওয়াজিব হওয়ার জন্য ব্যক্তির আর্থিক অবস্থাই মূল বিবেচ্য। একজন মুসলমানের উচিত কুরবানির সময় নিজের আর্থিক অবস্থার সঠিক পর্যালোচনা করে শরিয়তের আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়া।