
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ঘটনা উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, একটি ট্রেজার গান (ইলেক্ট্রিক শক দেওয়ার যন্ত্র) দেখতে চাওয়ার কৌতূহল থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এসব তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার জানান, গত ১৩ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে সাম্য ও তাঁর দুই বন্ধু মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। সেখানে একটি মাদক কারবারি চক্রের সদস্য মো. রাব্বি ওরফে কবুতর রাব্বির হাতে একটি ট্রেজার গান দেখে সাম্য সেটি দেখতে চান। রাব্বি রাজি না হলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে রাব্বি সাম্যকে ছুরিকাঘাত করেন। রাত ১২টার দিকে সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডিবির একাধিক দল গত কয়েকদিনে কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে মো. রাব্বি, মেহেদী হাসান, নাহিদ হাসান পাপেল, মো. রিপন, মো. সোহাগ, মো. রবিন, হৃদয় ইসলাম ও সুজন সরকারকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যায় ব্যবহৃত দুটি সুইচ গিয়ার চাকুও উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ঘটনার রাতেই শাহবাগ থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও তিনজনকে – তামিম হাওলাদার, সম্রাট মল্লিক ও পলাশ সরদারকে – গ্রেপ্তার করে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক ফুডকোর্ট ছিল, যেখানে গভীর রাত পর্যন্ত খাবার পাওয়া যেত। সাম্য ও তাঁর দুই সহপাঠী খাবারের জন্যই সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ট্রেজার গান নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে অন্যান্য মাদক কারবারিরাও এসে রাব্বির সঙ্গে যোগ দেয়। ডিবি প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে যে, এটি একটি তাৎক্ষণিক ঘটনা। তবে এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা বা বিষয় আছে কিনা, তা নিবিড়ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ডিবির এই কর্মকর্তা আরও জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক কারবারিদের তিনটি সক্রিয় দল রয়েছে। এর মধ্যে একটি দলের নেতা মেহেদী হাসান। গ্রেপ্তারকৃত অপর সাতজন তার দলের সদস্য। মেহেদীই মূলত সুইস গিয়ার সাপ্লাই দেন। ঘটনার দিন তিনি একটি ব্যাগে করে সুইস গিয়ারগুলো এনে তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগীদের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।
Comments