
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। গত ৫ দিনে জেলার তিন উপজেলায় অন্তত ২১টি গরু চুরির হয়েছে। সংঘবদ্ধ চোরের দল প্রতি রাতেই কোন না কোনো কৃষক ও খামারির বাড়িতে হানা দিচ্ছেন। ফলে চরম আতঙ্কে রয়েছেন তারা। কষ্টের পালিত গরু রক্ষার জন্য কেউ কেউ আবার গোয়াল ঘরেই নির্ঘুম রাত পার করছেন। তবে অজ্ঞাত কারণে বেশিরভাগ চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে আগ্রহী নয় ভুক্তভোগীরা। তাদের দাবি পুলিশের তেমন তৎপরতা না থানায় অভিযোগ দিয়েও মিলছেনা কোন প্রতিকার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও চৌহালী উপজেলায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে কিছু লাভের আশায় ২-৪টি আবার অনেকে বেশি করে গরু লালন পালন করেন। এতে সাবলম্বীও হয়েছেন তারা। কিন্তু এবার কোরবানি ঈদ সামনে রেখে গরু চোরের উপদ্রব বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। এসব উপজেলায় প্রতিরাতেই কারো না কারো বাড়িতে গরু চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে চৌহালী উপজেলার ঘোড়জান ইউনিয়নের মুরাদপুর কাউলিয়া চরে তারা মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষককে শ্বাসরোধে হত্যা পর তিনটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার ও গরু উদ্ধার করতে পারেনি।
রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রম্মগাছা ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিল জানান, শনিবার (২৪ মে) গভীর রাতে তার প্রায় দুই লাখ টাকা মূল্যের লাল রঙের একটি ষাড় গরু চুরি হয়ে গেছে। তিনি ও তার পরিবারের লোকজন রোববারের বিভিন্ন গরুর হাটে খোঁজ করেও কোন সন্ধান পায়নি। তবে এ ঘটনায় তিনি এখনও থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। একই রাতে তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর শ্যামপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলামের গোয়ালঘরের জানালা ও মাটির দেয়াল ভেঙে ৭টি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম ও তার পরিবার বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
রোববার (২৫ মে) রাতে রায়গঞ্জ উপজেলার ডুমরাই গ্রামের কাদের মির্জার ৫টি গরু ও দুটি মহিষ চুরি হয়েছে। একই মহল্লার তালেব মির্জার গোয়াল থেকেও তিনটি গরু চোরের দল নিয়ে গেছে। এদিকে প্রতি রাতে এমন চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশের তৎপরতা নেই বলে দাবি করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
কৃষক তারা মিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনটি গরু লুটের বিষয় জানতে চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ওই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনের নামে একটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেফতার করতে তারা জোড়ালো চেষ্টা করছেন।
রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম মাসুদ রানা ৮টি গরু ও দুটি মহিষ চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত রাতে চুরির বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, গোয়ালঘরের জানালা ও মাটির দেয়াল ভেঙে ৭টি গরু চুরির ঘটনায় রাতে লুৎফর ও চঞ্চল নামের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
Comments