Image description

সুনামগঞ্জের ছাতকে টিআর, কাবিখা, কাবিটা’র দুইশত ২৭টি প্রক‌ল্পের কাজ শুরু ক‌রেন উপ‌জেলা প্রশাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা। ভারপ্রাপ্ত পিআইও লুৎফুর রহমান ও বর্তমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা কে, এম মাহবুর রহমান ম‌ধ্যে ঘু‌ষের টাকার ভাগ নি‌য়ে হাতাহাতির ঘটনা নি‌য়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছে। এ ঘুষ কে‌লেংকা‌রি ঘটনাটি ধামাচাপা দি‌তে দু দুনী‌তিবাজ পিআইও ‌জেলা ও বিভা‌গের বি‌ভিন্ন দপ্ত‌রের ধর্না দি‌চ্ছেন।

জানা যায়, ২০২৪ ও ২৫ অর্থ বছরে প্রথম ও ২য় পর্যায়ে কা‌বিটা ৮৬‌ টি প্রক‌ল্পে সরকার ১ কো‌টি ৭৫ লাখ ৭৮ হাজার ৭ শত ৩১ টাকা, টিআর ৯৭‌ টি প্রকল্পে সরকার ১‌ কো‌টি ৪৮ লাখ ৬৫ হাজার তিন শত ৬৫ টাকা, কা‌বিখা চাউল ও গম ৪৪ টি প্রক‌ল্পে ২ শ ২৫ মেঃ টন ২৪ কেজি বরাদ্ধ করা হয়। ১৩ ইউনিয়‌নের এসব প্রক‌ল্পের কাজ চলামান র‌য়ে‌ছে।

উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে টিআর ও কাবিখা, কাবিটা ও বিশেষ প্রকল্পের কাজ না স‌ঠিক ম‌তো বাস্তবায়ন হ‌লে ও অ‌ফিসের কর্মকতা কর্মচা‌রিরা টাকা ছাড়া বিল দি‌চ্ছেন ব‌লে একা‌ধিক অ‌ভি‌যোগ উঠে‌ছে। এ অ‌ফি‌সে ঘু‌সের টাকা ভাগ বা‌টোয়ারা নি‌য়ে ভারপ্রাপ্ত ‌পিআইও লুৎফুর রহমান ও মাহবুর রহমা‌নের মধ্যে হাতাহা‌তির ঘটনা ঘ‌টে‌ছে। গত শুত্রুবার রা‌তে উপ‌জেলা পিআইও অ‌ফি‌সে সাম‌নে এ ঘটনা ঘ‌টে। এসব ঘটনায় নি‌য়ে গত শ‌নিবার উপ‌জেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অ‌ফি‌সে গে‌লে অ‌ফি‌সের একাধিক কর্মকতা ও কর্মচা‌রি এঘটনার সত্যতা নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন এ প্রতি‌নি‌ধি‌কে। প্রতি এক লা‌খ টাকার প্রকল্প হ‌লে ম‌ধ্যে ১০ হাজার ক‌রে পিআইও ও কমচা‌রি‌কে ঘুষ না দি‌তে হ‌বে। তা‌দের চা‌হিদা ম‌তো ঘু‌ষের টাকা না দি‌লে কা‌জরে বিল পা‌চ্ছেন না চেয়ারম্যানরা।উপ‌জেলাবাসী অ‌ভি‌যোগ ক‌রেছেন অর্ধশতাধিক প্রক‌ল্পের চেয়ারম্যানদের কাছ থে‌কে অ‌ফিসে নাজমুল ১০ লাখ টাকা বেশী ঘুষের টাকা আদায় ক‌রে‌ছে ব‌লে অ‌ভি‌যোগ উঠে‌ছে অ‌ফি‌সের দু পিআইও র বিরু‌দ্ধে।

আওয়ামী লীগ সরকার পতন ঘট‌লে তা‌দের দোসররা স্বপ‌দে বহাল থে‌কে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কে এম মাহবুর রহমান আবা‌রো আলোচনায় চ‌লে আস‌ছে। ভারপ্রাপ্ত লুৎফুর রহমান ও কে এম মাহবুর রহমান ও অ‌ফি‌সের নাজমুলের ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতিতে ছাতক পিআইও অফিস ঘুষ-দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সংশ্নিষ্ট প্রকল্প সভাপতি ও উপজেলা পিআইও নিজেদের মধ্যে যোগসাজশে এসব টাকা লুটপাট ও আত্মসাৎ করার সিন্ডি‌কেট গ‌ড়ে তোলার ল‌ক্ষে পিআইও কে এম মাহবুর রহমান গোপ‌নে কাজ চালা‌চ্ছেন ব‌লে সু‌ত্র জানায়। আগে টাকা পরে কাজ, সঠিক কাজ করলে ১০ ভাগ ঘুষ দিতে হবে, না দিলে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হ‌য়ে‌ছেন প্রক‌ল্পের চেয়ারম্যানরা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কেএম মাহবুর রহমান যোগদান করার পর টাকা ছাড়া কোনো ফাইল নড়ে না। সরকারি প্রকল্পে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন ইউপি মেম্বার-চেয়ারম্যানরা। বিশেষ করে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি বরাদ্দের টাকা নয় ছয় করা হচ্ছে।

এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নভুক্ত গ্রামাঞ্চলের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, কবরস্থান, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট স্থাপন, মেরামত ও সংস্কারের জন্য সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার বরাদ্দ অর্থের সিংহভাগ তছরুপ হচ্ছে। বেশির ভাগ কাজ না করে পিআইও’র মাধ্যমে ভাগ-বাটোয়ারা প্রচেষ্টা চালা‌নো হ‌চ্ছে। গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর ছাতক উপজেলা প্রকল্প অফিস খোলা থাকলে পিআইও অফিস কক্ষ ক‌য়েক মাস বন্ধ ছিল। রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে বিভিন্ন ইউনিয়নে আত্মসাৎকৃত প্রকল্পে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এদের অব্যাহত দুর্নীতি-অপকর্ম।

এ ব্যাপারে অ‌ফি‌সের নাজমুল দোলারবাজার ইউপির ক‌য়েক‌টি প্রক‌ল্পে চেয়ারম্যানের কাছ থে‌কে বড় অং‌কের টাকা আদায় কথা অব‌শে‌ষে সবার সাম‌নে স্বীকার ক‌রেন। সে ভারপ্রাপ্ত পিআইও লুৎফুর রহমা‌নের নি‌দে‌শে বি‌ভিন্ন প্রকল্প চেয়ারম্যানদের কাছ থে‌কে এসব টাকা আদায় ক‌রার কথা স্বীকার ক‌রেন। 

এবিষয়ে দোয়ারাবাজার উপ‌জেলার পিআই ও লুৎফুর রহমানকে এসব ঘটনার অস্বীকার ক‌রে ব‌লেন নাজমুুল সব জা‌নে ব‌লে ফোন কে‌টে দেন। প্রকল্প কর্মকর্তা কে এম মাহবুর রহমানকে তার অফিসে গিয়ে না পে‌য়ে তা‌কে মোবাইল কর‌লে সুনামগঞ্জ স‌চিব আস‌ছে ব‌লে দেখা ক‌রে‌নি। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নিবাহী কর্মকতা মোহাম্মদ ত‌রিকুল ইসলাম বলেন এসব ঘটনার খবর তি‌নি শু‌নে‌ছেন। ত‌বে এদের বিরু‌দ্ধে লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ পে‌লে আইনানুগ ব্যবস্থা নে‌ওয়া হবে।