ভারতে সামরিক অভিযানের পর পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রাগার দেখভাল করা শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক সংস্থা ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির (এনসিএ) কোনো বৈঠকের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। শনিবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এনসিএ’র সভা আহ্বানের খবর প্রকাশিত হলেও প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই বিবৃতি দেন।

এআরওয়াই টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, "ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির কোনো বৈঠক হয়নি, কোনো বৈঠক হওয়ার সময়সূচিও ছিল না।" বার্তা সংস্থা রয়টার্স পূর্বে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে, শনিবার ভোরে ভারতকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের পর এনসিএ’র বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।

এর আগে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রক কমিটিকে দেখার জন্য ডেকেছেন। তবে এ বিষয়ে দেশটির তথ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পারমাণবিক বিকল্পের প্রসঙ্গ টেনে খাজা আসিফ বলেন, "আপনি যে বিষয়টি (পারমাণবিক বিকল্প) সম্পর্কে কথা বলছেন তার উপস্থিতি আছে। কিন্তু আসুন এটি নিয়ে কথা না বলি। আমাদের এটাকে খুব দূরবর্তী সম্ভাবনা হিসাবে বিবেচনা করা উচিত, আমাদের তাৎক্ষণিক প্রেক্ষাপটে এটি নিয়ে আলোচনা করাও উচিত নয়।" তিনি আরও বলেন, "আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে আমার মনে হয় উত্তেজনা কমে আসবে। ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির কোনো সভা হয়নি এবং এমন কোনো সভার সময়সূচিও নির্ধারিত হয়নি।"

এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার স্থানীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, "ভারত যদি এখানে থামে তবে আমরাও এখানে থামার কথা বিবেচনা করব।"

অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি উভয় পক্ষকে পরিস্থিতির উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন। আসিম মুনিরের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে রুবিও জানান, ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনার সময়ও তিনি উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ভারত শাসিত জম্মু কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ভারত শুরু থেকেই এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে এবং হামলায় জড়িত দুই সন্ত্রাসীর পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই ঘটনার জের ধরে উভয় দেশ পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে ভারত পাকিস্তান ও দেশটির নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে হামলা চালায়। এর জবাবে পাকিস্তান শুক্রবার রাত থেকে ‘অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুস’ শুরু করেছে।