
ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলের একটি ব্যস্ত টোল গেটে বাসের ধাক্কায় ১০ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বাসচালক গাড়ি চালানোর সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে চার শিশুও রয়েছে। খবর রয়টার্সের।
বৃহস্পতিবার শ্রম দিবসে পরিবারগুলো ভ্রমণরত অবস্থায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সুবিক-ক্লার্ক-তার্লাক এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ম্যানিলা ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলোর মধ্যে শ্রমিকরা নিয়মিত চলাচল করেন। দুর্ঘটনায় জড়িত বাসটি পরিচালনাকারী কোম্পানি সলিড নর্থ বাসের অপারেশন স্থগিত করেছে ফিলিপাইনের পরিবহন মন্ত্রণালয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বাসচালককে অবহেলাজনিত অসতর্কতার কারণে একাধিক হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হতে পারে। বাস কন্ডাক্টরকেও আটক করা হয়েছে। ফিলিপাইন রেড ক্রস জানিয়েছে, এ দুর্ঘটনায় তিনটি এসইউভি ও একটি কন্টেইনার ট্রাকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই ফিলিপাইন রেড ক্রস দ্রুত একটি উদ্ধার ও চিকিৎসা দল ঘটনাস্থলে পাঠায়। তারা আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দেয় এবং কিছু লোককে বাস থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনাস্থলে এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে।
ফিলিপাইনে সড়ক দুর্ঘটনা একটি প্রচলিত ও গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা। সেখানে চালকদের ক্লান্তি, যানবাহনের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং হাইওয়েগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে।
সর্বশেষ এই ঘটনায় নতুন করে উঠেছে চালক প্রশিক্ষণ ও দীর্ঘদূরত্বের যাত্রায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির প্রসঙ্গ।
ফিলিপাইনে প্রাণঘাতী বাস দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। সম্প্রতি বাসচালকদের মাদকসেবনের খবর শিরোনাম হয়েছে, যদিও বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনায় এটি কোনও কারণ কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এপ্রিলে ৮৪ জন চালকের মাদক পরীক্ষা পজিটিভ আসার পর বেশ কিছু গণ পরিবহন কোম্পানিকে (বাস, জিপনি ও ট্রাইসাইকেল) অপারেশন স্থগিতের মুখে পড়তে হয়েছিল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পরিবহন সচিব ভিন্স ডিজন শুক্রবার ৩০টি বাস কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম জিএমএ নেটওয়ার্ককে বলেন, চালক যদি ঘুমিয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের দেখতে হবে তিনি কতক্ষণ কাজ করছিলেন। হতে পারে বাস কোম্পানি তাকে দীর্ঘ সময় কাজ করতে বাধ্য করেছিল। আমাদের সবদিক বিবেচনা করতে হবে, শুধু অস্থায়ী সমাধান নয়।
২০২৩ সালে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে এক বাসের ব্রেক বিকল হয়ে ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের কাছে ‘কিলার কার্ভ’ নামে পরিচিত পাহাড়ি পথে ওই বাস খাদে পড়ে ১৭ যাত্রী নিহত হয়েছিলেন।
Comments