Image description

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত ফরাসি দ্বীপ মায়োতেতে ঘূর্ণিঝড় চিডো তাণ্ডবে নিহতের সংখ্যা প্রায় এক হাজার হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর ) বিবিসি, সিএনএনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।

আফ্রিকা মহাদেশের মূল ভূখণ্ড ও মাদাস্কারের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করা মায়োতে ফ্রান্স অধিকৃত কিছু দ্বীপের সমষ্টি। শনিবার এই দ্বীপপুঞ্জে ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় চিডো।  এতে পুরো দ্বীপপুঞ্জই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা জীবিত মানুষের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন। কিছু কিছু জায়গায় এখনো তাঁরা পৌঁছাতে পারেননি।

মায়োতে ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষের বসবাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ বলেছেন, খাবার, পানি ও আশ্রয়ের প্রচণ্ড সংকট থাকায় তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন।

রাজধানী শহরের  বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসমাইল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, সেখানকার পরিস্থিতি ‘মর্মান্তিক’। পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পারমাণবিক যুদ্ধে যেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে, তেমনটাই সেখানকার পরিস্থিতি। তাঁর আশপাশের বিভিন্ন জায়গা অদৃশ্য হয়ে গেছে।

মায়োতের দরিদ্র মানুষেরা বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। এসব দরিদ্র মানুষের মধ্যে অনথিভুক্ত অভিবাসনপ্রত্যাশীরাও আছেন। অভিবাসী হওয়ার আশায় তাঁরা ওই ফরাসি অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছেন। আবাসনের দুর্বল প্রকৃতির কারণে তাঁরা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

মায়োতের বাসিন্দারা ফ্রান্সের আর্থিক সহায়তার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে লড়ছেন। মায়োতের জনসংখ্যার প্রায় ৭৫ শতাংশই জাতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। সেখানকার মানুষদের প্রতি তিনজনে প্রায় একজনই বেকার।

দ্বীপ অঞ্চলটির নেতা ফ্রাঁসোয়া-জাভিয়ের বিউভিল স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসাব পাওয়া গেলে মৃত মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে। মৃত মানুষের সংখ্যার ব্যাপারে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘অবশ্যই কয়েক শ’ হবে এবং ‘কয়েক হাজারেও’ পৌঁছাতে পারে।

গতকাল রবিবার ভোরে মোজাম্বিকেও আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় চিডো। আবহাওয়া বিভাগের তথ্যানুসারে, উত্তরাঞ্চলীয় শহর পেম্বার প্রায় ২৫ মাইল দক্ষিণে এটি আছড়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঘূর্ণিঝড়টির কারণে গত শনিবার সকালে উত্তর উপকূলীয় প্রদেশ নামপুলা ও কাবো দেলগাদোতে কাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং বিদ্যুৎ–বিভ্রাট দেখা দেয়।

মানবকণ্ঠ/এসআর