
ফ্যাসিবাদ বিদায় হলেও ‘দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘মৌলবাদীরা এখন বেহেশতের টিকিট বিক্রি করতেছে। অর্থাৎ তাদের সঙ্গে থাকলে আপনি বেহেশতে যাবেন আর তাগো লগে না থাকলে আপনি দোজখে যাইবেন। আর নিজেরা বেহেশতে যাইব কিনা সেই কথা তারা জানে না। সেজন্য আমি বলব, দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে। আমরা ফ্যাসিবাদের থেকে মুক্তি পাইছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে আমরা এখন সাম্প্রদায়িকতা উগ্র উন্মাদনা সৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে যেটার মধ্য দিয়ে মব তৈরি হয়।’
শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা যদি গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে না রাখতে পারি তাহলে সাম্প্রদায়িকতা হবে ফ্যাসিবাদের চেয়ে দ্বিগুণ কঠিন এবং জনজীবন ধ্বংসের শেষ মাথায় নিয়ে যাবে। এই আধুনিক বিশ্বে মুক্ত চিন্তা, প্রতিভার বিকাশ এরা (সাম্প্রদায়িক শক্তি) হতে দেবেন না, ওরা করতে দেবেন না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। প্রত্যেকটা ধর্ম যে যেই বিশ্বাসই করুক না কেন ধর্ম কিন্তু মানুষকে সঠিক পরিচালিত করার জন্য একটা জীবন ব্যবস্থা, ধর্মে যেটা পাপ আধুনিক রাষ্ট্র আইনে সেটা হলো অন্যায়। সেই অন্যায়ের বিচারের ধারার মধ্যে লেখা থাকে কোন অন্যায়ের জন্য কতটুক শাস্তি। ঠিক আপনি পবিত্র কোরআন-গীতা পড়েন কোন পাপের জন্য মৃত্যুর পরে কার কি শাস্তি হবে সেটাও কিন্তু লেখা আছে। সেই কারণে ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্র ব্যবস্থার কোনো সাংঘর্ষিক ব্যাপার নাই।’
পিআর পদ্ধতি ও নেপাল প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, ‘গণতন্ত্র মানে হলো জনগণ ভোটে সরকার নির্বাচিত হবে। অন্তবর্তীকালীন সরকার তো সংস্কার গান গাইতে গাইতে অনেক কুসংস্কারে পরিণত করে ফেলেছে। ওই যে বললাম, হায়ার করে বিদেশ থেকে বুদ্ধিমান লোক আনা হইছে আর এত বুদ্ধিমান একখানে বসলে যা হয় তাই হইতেছে। বদিউল আলম মজুমদার একটা বিরাট লেখা লেখছেন পিআর এর বিরুদ্ধে। এই পিআরটা নেপালে আছে। এজন্য সকাল বিকাল প্রধানমন্ত্রী পাঠায়। পাকিস্তানে সিএসপির(সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান) ভাইবা পরীক্ষায় একজনকে জিজ্ঞাসা করেছিলো যে, পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রীর নাম কি? পরীক্ষার্থী বললেন, সরি স্যার আমি তো সকালবেলা পত্রিকাটা পড়ি নাই। কালকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জানি অমুক, এর মধ্যে যদি পরিবর্তন না হয়ে থাকে। এই পিআরের ব্যবস্থাটা এরকম যে, সকালে প্রধানমন্ত্রী একজন, দুপুরে আরেকজন, রাত্রেবেলা আরেকজন এই পদ্ধতি।’
সংগঠনের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহিদুল হক দেওয়ানের আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Comments