Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, “১০টা হোন্ডা, ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা—এই দিন আমরা ৫ আগস্টেই শেষ করেছি। এখন আর হোন্ডা-গুণ্ডার রাজনীতি চলবে না। নেতৃত্ব তৈরি হবে নেতা হওয়ার গুণাবলি থেকে।”

রোববার রাতে দেবিদ্বারের বড়কামতা ইউনিয়নের ব্রাহ্মণখাড়া গ্রাম ও ভানী ইউনিয়নের সাইতলা গ্রামে ‘উঠানে রাজনীতি’ শীর্ষক দুটি বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে গণপরিষদ নির্বাচন, নতুন সংবিধান, বিচার ও সংস্কারের দাবি জানানো হয়।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এনসিপি হলো ইনসাফের পক্ষে একটি দল। ইনসাফের বিপরীতে থেকে কেউ এই দলে রাজনীতি করতে পারবে না। “হাজার হাজার লোক এনে প্রোগ্রাম সফল করলেও যদি বেইনসাফি করা হয়, সেই নেতৃত্ব আমাদের দরকার নেই। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রতিটি গ্রাম-মহল্লায় যদি মানুষ সংঘবদ্ধ হয়, তাহলে অপরাধীরা সাহস পাবে না। অপরাধ করতে শক্তির প্রয়োজন হয়, আর সেই শক্তি আসে রাজনৈতিক ব্যাকআপ থেকে।”

তিনি আরও বলেন, জনগণের পাশে দাঁড়াতে জনপ্রতিনিধি হওয়ার দরকার নেই। “জনগণের পাশে থাকতে এমপি, চেয়ারম্যান বা মেম্বার হওয়ার প্রয়োজন নেই। ভালো মানুষ হলেই যথেষ্ট। সত্য বলার জন্য রাজনৈতিক শেল্টারের দরকার নেই। তবে সত্য বলার পর কেউ যদি বাধা দেয়, জুলুম করে, তবে আমি আপনাদের পাশে দাঁড়াব।”

রাজনৈতিক কর্মীদের আর্থিক কষ্টের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “অনেকে সারা দিন খেটে প্রোগ্রাম সফল করেন। কিন্তু আমি কাউকে ৫০০ বা ১০০০ টাকা দেওয়ার সামর্থ্য রাখি না। ভবিষ্যতেও সেই সামর্থ্য হবে কি না জানি না। কারণ রাজনীতি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কেবল দুর্নীতি করলে বা কমিশন খেলে তা সম্ভব—যেটা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “যারা অপরাধ দমন করে, তাদেরই অনেক সময় অপরাধীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকে। থানায় অভিযোগ দিতে গেলে দেখা যায় অপরাধী পুলিশের সঙ্গে বসে চা খাচ্ছে। পুলিশেরও দোষ নেই, এমপির কথা না শুনলে তাদের ট্রান্সফারের ভয় দেখানো হয়।”

বংশানুক্রমিক নেতৃত্বের সমালোচনা করে হাসনাত বলেন, “আমাদের দেশে অনেক নেতা বয়স শেষে ছেলেকে বিদেশ থেকে এনে নেতা বানান। অন্যের সন্তান দিয়ে প্রটোকল নেন, রাজনীতি করান। অথচ এখন সময় বদলেছে। কৃষকের ছেলে, শ্রমিকের ছেলে বা নেতার ছেলে—যোগ্যতা থাকলেই কেবল সে নেতা হবে।”

এনসিপির দেবিদ্বার উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী জামাল মোহাম্মদ কবিরের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সংগঠক মো. আরমান হোসাইন, জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক নাজমুল হাসান নাহিদ, সার্চ কমিটির সদস্য কাদির আহমেদ ও সাকিল আহমেদ প্রমুখ।