Image description

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রকৌশলীকে লাথি মেরে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে, যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত মাহবুব আলম মুন্সী মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ তার অফিসের চেয়ারে বসে আছেন। টেবিলের অপর প্রান্ত থেকে জামায়াত নেতা মাহবুব আলম মুন্সী দাঁড়িয়ে তাকে সরাসরি বলছেন, "লাথি মেরে তোকে বের করে দেব।" এই মুহূর্তটিই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে মাহবুব আলম মুন্সীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মুরাদনগর উপজেলার একটি বেহাল সড়কের সংস্কারের আবেদন নিয়ে তিনি প্রকৌশলীর কাছে গিয়েছিলেন। প্রকৌশলী আবেদনটি দেখে গড়িমসি শুরু করেন এবং বলেন এটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব। রাস্তাটি জরুরিভাবে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গেলে প্রকৌশলী উত্তেজিত হয়ে যান এবং বলেন, "যদি রাস্তা ভেঙে পানি জমে থাকে তাহলে আপনারা গিয়ে বালতি দিয়ে সে পানি পরিষ্কার করেন।" প্রকৌশলী উত্তেজিত হওয়ায় তিনিও উত্তেজিত হয়ে পড়েন বলে মাহবুব আলম মুন্সী দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, পরে তাদের মুরব্বীরা মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসে বসে বিষয়টি সুরাহা করে নেন। শর্ত অনুযায়ী তার কাছে কিছু ভিডিও ছিল, যা তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন। মাহবুব আলম মুন্সী দাবি করেন, "আসলে ওই ঘটনার সময় আমাদের প্রায় ১০ মিনিট তর্ক বিতর্ক হয়েছে। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে মাত্র ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে।"

মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের আমির আ ন ম ইলিয়াস এই ঘটনাকে "দুঃখজনক" আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, "এক পক্ষ থেকে তো আসলে কোনো ঘটনা তৈরি হয় না। যাইহোক বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বসে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে সুরাহা করেছি। এই ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি। এ ধরনের ঘটনা, না হওয়াটাই ভালো।"

তবে এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণর সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আবদুর রহমান জানান, রাস্তা সংস্কারের আবেদনটি প্রথমে তার কাছে এসেছিল এবং তিনি তাদের প্রকৌশলীর কাছে পাঠিয়েছিলেন। তিনি বলেন, "সেখানে গিয়ে তারা আসলে কী করেছে আমি তা জানি না। পরে আমি তাদের নেতৃত্ব স্থানীয় লোকদেরকে ডেকেছিলাম এবং তারা উপস্থিত হয়ে এ বিষয়টির ওপর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।" 

ইউএনও আরও বলেন, "সাধারণ হোক কিংবা অসাধারণ ব্যক্তি, কেউই চাইলেই কোনো কর্মকর্তার অফিসে ঢুকে এ ধরনের আচরণ করতে পারে না।"